নিজস্ব প্রতিনিধি, লালমনিরহাট : লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় ৬১ বিজিবির তিস্তা ব্যাটালিয়ন-২ ক্যাম্পের পেছন দিয়ে চলাচলের রাস্তা নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। এ রাস্তা নিয়ে সোমবার (২৬ জুলাই) ক্যাম্প এলাকায় স্থানীয় গ্রামবাসী ও বিজিবি সদস্যদের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে হাতীবান্ধা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ (ওসি) এরশাদুল আলমের মধ্যস্থায় উভয়পক্ষের মাঝে সমঝোতা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, ওই বিজিবি ক্যাম্পের পেছনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মিত তিস্তা নদীর একটি বাঁধের ওপর দিয়ে ৬০-৭০টি পরিবার চলাচল করেন। বেশ কিছুদিন ধরে ওই বাঁধের ওপর দিয়ে চলাচলে বিভিন্ন সময় বাধা প্রদান করে ৬১ বিজিবির তিস্তা ব্যাটালিয়ন-২ ক্যাম্পের সদস্যরা।
বিষয়টি নিয়ে রোববার (২৫ জুলাই) হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জেসমিন নাহার ও গড্ডিমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল ওই ক্যাম্পের পরিচালক লে. কর্নেল মির হাসান শাহরিয়া মুহাম্মদের সঙ্গে দেখা করতে যান। কিন্তু তিনি দেখা না করে তাদের ফিরিয়ে দেন।
খবরটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সোমবার (২৬ জুলাই) সকালে স্থানীয় কয়েক শতাধিক লোক ক্যাম্পের কাছে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভ করেন। এতে ওই এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হয়। খবর পেয়ে হাতীবান্ধা থানা পুলিশের ওসি এরশাদুল আলম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উভয়পক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমঝোতায় বসেন।
দুপুরে ওই সমঝোতা বৈঠক শেষ হলে ক্যাম্পের পরিচালক লে. কর্নেল মির হাসান শাহরিয়া মুহাম্মদ ও গড্ডিমারী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল জানান, এখন থেকে ওই বাঁধের ওপর দিয়ে স্থানীয় লোকজন চলাচল করতে পারবে। তবে বহিরাগতরা চলাচল করে জটলা তৈরি করতে পারবে না।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মতিয়ার রহমান জানান, ওই বাঁধের ওপর দিয়ে ৬০-৭০ পরিবার চলাচল করে। তবে কিছুদিন ধরে বিজিবি সদস্যরা চলাচলে বাধা দিচ্ছে। এতে স্থানীয় লোকজনের সমস্যা হচ্ছে।
গড্ডিমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল বলেন, বিষয়টি নিয়ে গতকাল বিজিবির সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের সঙ্গে কথা বলেনি। ফলে আজ স্থানীয় লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহার হোসেনের সঙ্গে কথা বলে ওই বাঁধের ওপর দিয়ে চলাচলে বাধা দেবে না এমন শর্তে সমঝোতা হয়েছে।
তিস্তা ব্যাটালিয়ন-২ ক্যাম্পের পরিচালক লে. কর্নেল মির হাসান শাহরিয়া মুহাম্মদ জানান, ওই বাঁধের ওপর দিয়ে চলাচলে স্থানীয় লোকজনকে বিজিবি কখনও বাধা দেয়নি। করোনাকালীন তাদের চলাচল সংকুচিত করতে অনুরোধের পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করতে বলা হলেই কিছু বহিরাগত লোকজন নানা অজুহাত তৈরি করছেন। আমরা স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে মিলেমিশে এখানে অবস্থান করছি। আজকের এ উত্তেজনা পরিস্থিতি বহিরাগত কিছু লোক সৃষ্টি করেছেন।
ওসি এরশাদুল আলম এ নিয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি। তিনি বলেন, ওই এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে অবনতি না হয় সেই দিকে সবাইকে সর্তক থাকতে অনুরোধ করেছি।
সান নিউজ/এমএইচ