নিজস্ব প্রতিনিধি, রাজবাড়ী : করোনা মহামারি প্রতিরোধে সরকারের দেয়া ১৪ দিনের বিধিনিষেধের সোমবার (২৬ জুলাই) ছিল চতুর্থ দিন। লকডাউনের প্রথম দিন থেকেই দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম প্রবেশদ্বার রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে যাত্রীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। গত তিনদিনের মতো ভোর থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে আসা লোকজন ভিড় করে এই ঘাটে।
আবার পাটুরিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা প্রতিটি ফেরিতেই ছিল যাত্রীদের ভিড়। বিধিনিষেধে লঞ্চ বন্ধ থাকায় সাধারণ যাত্রীরা নদী পারের জন্য ফেরিকেই বেছে নিচ্ছে। কোনো প্রকার সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই তারা ফেরি পার হচ্ছে। অনেকের মুখে মাস্কও নেই।
সোমবার সকালে সরেজমিনে ঘাট এলাকায় দেখা যায়, দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, পণ্যবাহী ট্রাক নদী পাড়ি দিতে দৌলতদিয়া ঘাটে আসছে। সেই সঙ্গে কিছু প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলও দেখা যায়। এছাড়া ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, থ্রি-হুইলার, মাহেন্দ্র, রিকশা ও ভ্যানে করে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে অনেকে ঘাটে এসে নামছে।
আবার অনেকে ঢাকা-খুলানা মহাসড়ক দিয়ে হেঁটে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে এসে পৌঁছাচ্ছে। দূরপাল্লার পরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় কাউকে কাউকে খোলা ট্রাকে চলাচল করতে দেখা যায়। আবার পল্টুনের ওপর অনেককে ফেরির জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
অন্যদিকে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোয় চেকপোস্ট বসিয়েছে পুলিশ। এ সময় যারা স্বাস্থ্যবিধি মানছে না, তাদের জরিমানা করছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে আসা আহসান হাবীব নামের এক যাত্রী বলেন, জরুরি একটি কাজে ঢাকা যেতে হচ্ছে। কুষ্টিয়া থেকে ভোর ৬টায় রওনা হয়ে সকাল ১০টায় ঘাটে এসেছি। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ভেঙে ভেঙে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েই আসতে হয়েছে। পথে কয়েকবার পুলিশের বাধারও সম্মুখীন হয়েছি। কিন্তু কিছু করার নেই, জরুরি কাজ, তাই ঢাকা যেতেই হবে।
বসন্তপুর থেকে আসা আজিজুল হক নামের এক যাত্রী বলেন, আমি ঢাকার একটি বেসরকারি এনজিওতে চাকরি করি। ঈদের আগের দিন বাড়িতে এসেছিলাম। লকডাউনের কারণে আর ঢাকায় যাইনি। গতকাল অফিস থেকে ফোন আসে, কর্মস্থলে যেতেই হবে। তাই আজ সকাল সকাল ঢাকার উদ্দেশে রওনা হই। দৌলতদিয়া ঘাটে আসতে পুলিশের কয়েকটি চেকপোস্ট অতিক্রম করতে হয়েছে। এখন নদী পার হয়ে ঢাকা পর্যন্ত যেতে পারলেই হয়।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. শিহাব উদ্দিন বলেন, এই রুটে ছোট-বড় ৮টি ফেরি চলাচল করছে। সাধারণ যাত্রী পারাপারে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও মানবিক কারণে তাদের ফেরিতে উঠতে দেয়া হচ্ছে।
সান নিউজ/এমএইচ