নিজস্ব প্রতিবেদক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া: অপহরণকারী চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার দুই ছাত্রলীগ নেতাকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দিয়েছে জেলা ছাত্রলীগ। এরা হলেন বিজয়নগর উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আশিকুর রহমান ও উপজেলার চান্দুরা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক শাহনেওয়াজ মিলন।
রোববার (২৫ জুলাই) দুপুরে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
শাহাদাৎ হোসেন শোভন জানান, দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাদের দু'জনকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করা হবে। ঘটনা সত্য হলে দু'জনের বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলে তাদের অব্যাহতি প্রত্যাহার করা হবে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বিজয়নগর উপজেলার আব্দুল্লাহপুর গ্রামের হোসাইন আহমেদের ছেলে মোস্তফা আহমেদ ফয়সাল (৩৮)। অপহরণ, চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতিই তার মূল পেশা। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ২৪টি মামলা রয়েছে।
গত ১৫ জুলাই একই উপজেলার গাজীপুর গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে শেকুল মিয়ার (৩৮) ১ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যের একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চুরি করে ফয়সাল। ওই অটোরিকশাটি শাহবাজপুর রাজাবাড়িয়াকান্দির লুদু মিয়ার ছেলে নাজির মিয়া ও নাছির মিয়ার কাছে ৬৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেন তিনি। কাগজ করার সময় প্রতারণার আশ্রয় নেন ফয়সাল। হোসেন মিয়ার ছেলে আরমান মিয়ার মাধ্যমে অটোরিকশাটি এফিডেভিট করেন। এফিডেভিটসহ বিক্রির সময় সব কর্মকাণ্ড ভিডিও করে রাখেন ফয়সাল।
গত ২১ জুলাই বুধবার গভীর রাতে ফয়সালের নেতৃত্বে প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলযোগে সাত যুবক যান নাজিরের বাড়ি জেলার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের রাজাবাড়িয়াকান্দি গ্রামে। এরমধ্যে বিজয়নগর উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আশিকুর রহমান ও উপজেলার চান্দুরা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক শাহনেওয়াজ মিলনও ছিলেন। তারা নিজেদের ডিবির কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে চুরি হওয়া ওই অটোরিকশাটি দিয়ে দিতে বলেন। নতুবা নাজির-নাছিরসহ বাড়ির লোকজনকে অপহরণ করার হুমকি দেন। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ওই পরিবারের সদস্যরা।
কৌশল করেন নাছির। অটোরিকশাটি এনে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে নাছির তার আত্মীয়স্বজনকে মোবাইল ফোনে সব জানিয়ে দেন। স্বজনসহ গ্রামবাসী এসে তাদের চারদিকে ঘিরে ফেলে। পরে তাদের ঘরে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ তাদের থানায় নিয়ে যায়। ওইদিন রাতেই অপহরণ মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়।
গ্রেফতাররা হলেন- মোস্তফা আহমেদ ফয়সাল, সালমান, শেকুল মিয়া, মো. শাহাব উদ্দিন, বিজয়নগর উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আশিকুর রহমান ও উপজেলার চান্দুরা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক শাহনেওয়াজ মিলন এবং আশকর আলী।
অপহরণ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সরাইল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জাকির হোসেন খন্দকার বলেন, ‘ফয়সাল বড় মাপের করাপটেড। তার বিরুদ্ধে চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির এ পর্যন্ত ২৪টি মামলা রয়েছে। এ ঘটনার মূল হোতা ফয়সাল, অন্যরা সহযোগী।’
সাননিউজ/জেআই