নিজস্ব প্রতিনিধি, কুড়িগ্রাম: পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটির পর সরকার ঘোষিত ‘কঠোর’ লকডাউনে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের যাত্রাপুর হাটে পশুর হাট বসেছে।
শনিবার (২৪ জুলাই) কোনও রকম স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে সাপ্তাহিক পশুর হাট বসানো হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র-দুধকুমার নদের মোহনা অববাহিকায় বসা এই হাটে ক্রেতা-বিক্রেতা এমনকি ইজারাদারের প্রতিনিধিদেরও মাস্ক পরতে দেখা যায়নি।
চরাঞ্চল থেকে আগত বিক্রেতারা লকডাউন পুনর্বহালের খবর ‘জানেন না’ দাবি করে হাটে উপস্থিত হলেও হাট কমিটি বলছে, হাটের কার্যক্রম বন্ধ রাখার ব্যাপারে প্রশাসন থেকে কোনও ‘নির্দেশনা পাননি’।
তবে উপজেলা প্রশাসন বলছে, ‘নির্দেশনা পাইনি’ বলে হাট কমিটির দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। এটা দেশজুড়ে পূর্বঘোষিত নির্দেশনা।
শনিবার যাত্রাপুর হাটে দেখা যায়, জেলার গুরুত্বপূর্ণ এই হাটে ব্যাপক জনসমাগম ঘটেছে। হাটের মূল সড়কের দুই পাশে ভ্রাম্যমাণ পণ্য বিক্রেতাসহ স্থায়ী দোকানদাররাও ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে মাস্ক পরিধান কিংবা সামাজিক দূরত্বসহ স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনও লেশ পাওয়া যায়নি। পশুর হাটেও একই চিত্র দেখা গেছে।
স্বাস্থ্যবিধি বাস্তবায়নের দায়িত্ব যে ইজারাদার ও প্রতিনিধিদের; তারাই ছিলেন মাস্ক ছাড়া। যে দুই একজনের সঙ্গে মাস্ক ছিল, সেটাও মুখে নয়, থুতনিতে। মহামারি নিয়ে এমন উদাসীনতা কী ভয়াবহতা নিয়ে আসতে পারে সে ব্যাপারে হাট আয়োজকসহ ক্রেতা-বিক্রেতা সবাই নির্ভার।
হাটে গরু বিক্রি করতে আসা রেজাউল করিম রুবেল বলেন, ‘সংসার চালাতে টাকার প্রয়োজন। তাই হাটে গরু বেচতে আসছি। লকডাউনেও তো চলতে হবে।’
মাস্ক পরেননি কেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ভুলে ফেলে আসছি।’ এমন অজুহাত প্রায় সব বিক্রেতার। কেউ বলছেন, ‘গরম লাগে তাই খুলে রাখছি’ আবার কেউ বলেন, ‘এখানে কেউ মাস্ক পরে না, সবাই পরলে আমিও পরতাম।’
ক্রেতা-বিক্রেতার এমন অজুহাতের ব্যতিক্রম নন হাট ইজারাদারও। মাস্ক ছাড়াই হাটে উপস্থিত হাট ইজারাদারের প্রতিনিধি সানাউল বলেন, ‘মাস্ক আছে, অজু করার সময় খুলছি। আর পরার কথা মনে নেই।’ হাট অয়োজনে প্রশাসনের নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি পালনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমাদের ইজাদারের অফিসে কথা বলুন।’
লকডাউনে হাট অয়োজনে প্রশাসন থেকে কোনও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কি-না জানতে চাইলে যাত্রাপুর হাট কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘এমন কোনও নির্দেশনা পাইনি। চেয়ারম্যানও এ ব্যাপারে আমাকে কিছু জানাননি। কোনও বৈঠকও করেননি।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিলুফা ইয়াছমিন বলেন, ‘নির্দেশনা পাইনি এটা বলে হাট কমিটি দায় এড়াতে পারে না। পরবর্তী হাটে যাতে এমনটা না হয় সে ব্যাপারে আমরা ব্যবস্থা নেবো।’
সাননিউজ/এএসএম