আব্দুল্লাহ হেল বাকী,নওগাঁ: রাস্তার পাশ দিয়ে যেতেই চোখে পড়বে বাড়ির ছাদের উপরে শখের বাগানের টবে লাগানো কমলার গাছে ঝুলছে সবুজ আর হলদে রঙ্গের বড় বড় কমলা। শুধু কমলা নয় লাউয়ের গাছে লাউ, লেবুর গাছে লেবু, মরিচের গাছে কাঁচা মরিচ।
এটি হলো নওগাঁর ধামইরহাট পৌরসভার কামরুন নাহারের বাড়ির ছাদের উপরে তৈরি করা শখের বাগানের গল্প। বাড়ির ছাদের এই শখের বাগানে গেলেই আরো দেখতে পাওয়া যায় ছোট-বড় মাটির টবে লাগানো রয়েছে নানান জাতের সবজি। তার মধ্যে রয়েছে লাউ, বিদেশি ধনিয়া, বেগুন, ঝিঙ্গা, কাগজি লেবু ফলের মধ্যে রয়েছে আম, কমলা,কামরাঙ্গাসহ নানা জাতের গাছ।
ছোট্ট কমলার গাছে ধরেছিলো প্রায় ২৬ টি বড় বড় কমলা যার মধ্যে আর মাত্র কয়েকটি অবশিষ্ট রয়েছে। বড় বড় শহরের বাড়ির ছাদে এখন এই শখের বাগান চোখে পড়লেও মফস্বল এলাকায় এই বাগান নেই বললেই চলে। তবে যে ভাবে কৃষি ও আবাদি জমির পরিমাণ কমতে শুরু করেছে এক সময় মফস্বলের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষরাও শহরের দেখাদেখি নিজের বাড়ির ছাদে এই বাগান করতে শুরু করবে।
সৌখিনমানুষরা তাদের বাড়ির ছাদে এই শখের বাগান তৈরি করার জন্য কামরুনের কাছে এই বাগান সম্পর্কে জানতে প্রতিনিয়ত আসছে বলে জানান কামরুন নাহার।
বাগানের মালিক তিন নং ওয়ার্ড এর বাসিন্দা সাংবাদিক আব্দুল্লাহ হেল বাগান আমার খুব ভালো লাগতো। বর্তমানে আমাদের আবাদী জমির পরিমাণ দিন দিন উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাচ্ছে। তাই আমি ও আমার স্বামী মিলে আমাদের বাড়ির এই ফাকা ছাদটিতে বাগান করে কাজে লাগিয়েছি। প্রথমে আমার স্বামী শখের বসে বগুড়ার এক নার্সারি থেকে কমলা গাছের চারা এনে টবে লাগিয়েছে। এই ছোট্ট কমলার গাছে প্রায় ২৬টি বড় বড় কমলা ধরেছিলো। যার স্বাদ প্রথমে একটু টক হলেও ক’দিন পর খুব মিষ্টি হয়।
এছাড়া আমার স্বামী মাটির টবে মাটি দিয়ে রোপণ করেছে বিভিন্ন রকমের সবজি। বর্তমানে নিজেদের চাহিদা পূরণ করছি। বাজারের প্রতিটি সবজি ও ফল রাসায়নিক দ্রব্য দ্বারা উৎপাদিত কিন্তু আমার এই ছাদের বাগানে উৎপাদিত ফল ও সবজিগুলো বিষযুক্ত যা আমাদের মানব শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তাই আমাদের সকলের উচিত আমাদের বাড়ির ছাদ ফেলে না রেখে সেখানে কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী বাগান তৈরি করা।
এতে করে আমরা আমাদের বাগানে উৎপাদিত বিষযুক্ত সব্জি ও ফল ইচ্ছেমতো খেতে পারবো এবং দীর্ঘদিন সুস্থ ভাবে বাঁচতে পারবো। ধামইরহাট উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রেজাউল করিম বলেন, যে ভাবে আমাদের আবাদি জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে এক সময় মানুষ শহরের মতো গ্রামেও নিজ বাড়ির ফাঁকা ছাদে কামরুনের মতো শখের বাগান তৈরি করতে শুরু করবে।
ইতিমধ্যে মফস্বল এলাকার কিছু সচেতন মানুষরা বাড়ির ছাদের ফাঁকা জায়গায় কামরুনের মতো এই শখের বাগান তৈরি শুরু করেছে। বর্তমানে বাজারের সকল সবজি ও ফলে আশঙ্কাজনক হারে ব্যবহার করা হচ্ছে রাসায়নিক দ্রব্য নামক বিষ। এতে আমরা ব্যাপক হারে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। কিন্তু বাড়ির ছাদসহ বাড়ির আশেপাশের পড়ে থাকা ফাঁকা জায়গায় যদি আমরা ছোট ছোট আকারের বাগান তৈরি করি তাহলে সেই বাগান থেকে নিজেদের চাহিদা মতো বিষমুক্ত ফল ও সবজি খেতে পারি। বাড়ির ছাদে এই শখের বাগান তৈরি করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের জন্যও সরকারের কৃষি অফিসের দুয়ার সব সময় খোলা।
সাননিউজ/জেআই