নিজস্ব প্রতিনিধি, নোয়াখালী : নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরে প্রথম কোরবানির ঈদ উদযাপন করেছেন রোহিঙ্গারা। বুধবার (২১ জুলাই) সকাল ৮টায় ১৪টি শেল্টারে রোহিঙ্গারা একযোগে ঈদের নামাজ আদায় করেন। এছাড়া দুটি ওয়্যার হাউজে ও দুটি মসজিদে চারটি ঈদের জামাত আদায় করেছেন সেখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
ভাসানচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার কোরবানির জন্য দেয়া ২৩৫টি গরু ১০ পয়েন্টে জবাই করে ডাটাবেজ অনুযায়ী ৩৮টি ক্লাস্টারের প্রতিটি ঘরে মাংস বণ্টন করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গারা নিজেরা ঈদের জামাত শেষে গরু কোরবানি করে মাংস ভাগ করে নিয়েছেন। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার সংবাদ পাওয়া যায়নি।’
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান বলেন, ‘ভাসানচরে স্থানান্তর করা রোহিঙ্গাদের জন্য এবার কোরবানির জন্য ২৩৫টি গরু গত শনিবার ভাসানচরে পৌঁছানো হয়। সেখানে সুষ্ঠুভাবে কোরবানির পশু জবাই ও সবার মাঝে ভাগ করে সুষ্ঠু বণ্টনের জন্য জেলা প্রশাসনের অ্যাক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মংচিংনু মারমাকে দায়িত্ব দিয়ে সেখানে পাঠানো হয়েছে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাড়ে চার হাজারের বেশি রোহিঙ্গা পরিবারের কোরবানির জন্য ২২০টি গরুর চাহিদা থাকলেও তিনটি এনজিও সংস্থার মাধ্যমে ২৩৫টি গরু সরবরাহ করা হয়।
সেখানে বর্তমানে ৩৮টি ক্লাস্টারে অবস্থান করছে রোহিঙ্গা পরিবারগুলো। তাই কোরবানি শেষে দ্রুত মাংস বণ্টনের জন্য ১০টি পয়েন্ট চিহ্নিত করে দেয়া ছিল। প্রতিটি পরিবারের কাছে কমপক্ষে দুই কেজি করে কোরবানির মাংস সরবরাহ করা হয়।
ভাসানচর আশ্রয়ণের প্রকল্পের পরিচালক কমডোর রাশেদ সাত্তার বলেন, ‘সারাদেশের মতো কোরবানি ঈদে ভাসানচরের রোহিঙ্গাদের মাঝেও ছিল উৎসবের আমেজ। সবাই নিজ উদ্যোগে একে অপরকে সহযোগিতার মাধ্যমে সকল কাজ সম্পন্ন করেছেন।’
শরণার্থী বিষয়ক কমিশনের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘ডাটাবেজ অনুযায়ী প্রতিটি ক্লাস্টারে একটি করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। পশু কোরবানির পর ওই কমিটির মাধ্যমে প্রতিটি ঘরে ঘরে মাংস পৌঁছে দেয়া হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, কক্সবাজার থেকে নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরে এ পর্যন্ত ১৮ হাজার ৩৪৭ জন রোহিঙ্গাকে স্থানান্তর করা হয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বরে আরও ৮০ হাজার রোহিঙ্গা ভাসানচরে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
সাননিউজ/এমএইচ