নিজস্ব প্রতিনিধি, যশোর : যশোরের চৌগাছায় শ্বশুরের অপমানের প্রতিশোধ নিতেই শিশির শ্যালককে হত্যা। নিহত এহতেশাম মাহমুদ রাতুল (১৮) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। হত্যাকাণ্ডের পাঁচদিনের মধ্যে জড়িত শিশির আহম্মেদকে (২১) গ্রেফতার করা হয়েছে। শিশির একই জেলার কোটচাঁদপুরের কাশিপুর গ্রামের হায়দার আলী মণ্ডলের ছেলে ও নিহত রাতুলের ভগ্নিপতি।
শনিবার (১৭ জুলাই) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান যশোর ডিবি পুলিশের কর্মকর্তারা। নিহত রাতুল মহেশপুর সামবাজার এমপিবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।
যশোর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ইনচার্জ রুপন কুমার সরকার বলেন, সোমবার (১২ জুলাই) বিকেলে চৌগাছা লস্করপুরে একটি পাটক্ষেতে থেকে মুখে স্কচটেপ মোড়ানো মরদেহ পাওয়া যায়। এ হত্যাকাণ্ডের কোনো ক্লু ছিল না।
এরপর মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) নিহতের বাবা মহিউদ্দিন চৌগাছা থানায় মামলা করেন। মামলাটির স্পর্শকতার হওয়ায় যশোরের পুলিশ সুপার (এসপি) মামলাটির তদন্তভার দেন ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামীম হাসানের ওপর। পরে শুক্রবার (১৬ জুলাই) তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে চট্টগ্রাম থেকে শিশিরকে আটক করা হয়।
মহিউদ্দিন জানায়, ‘শিশির আট মাস আগে আমার মেয়েকে গোপনে বিয়ে করেন। এরপর থেকেই সে যৌতুকের দাবি করতে থাকেন। কিন্তু আমরা তাকে বারবার জানাই যে, আমরা এখনও যৌথ পরিবারে বসবাস করি। তাই তুমি নিজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার চেষ্টা করো। আমাদের কাছ থেকে কিছু পেতে হলে, সময় লাগবে। সে ঢাকায় সিকিউরিটি গার্ডের কাজ করতো। কিন্তু তার লোভ ছিল খুব বেশি।’
তিনি আরও বলেন, ‘একপর্যায়ে শিশির কৌশলে আমার ছেলে রাতুলকে রোববার বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরে মঙ্গলবার ফেসবুক ও অনলাইন পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারি, রাতুলকে মুখে স্কচটেপ মোড়ানো অবস্থায় চৌগাছার পাটক্ষেতে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে।’
যশোর ডিবি পুলিশের এসআই শামীম হাসান জানায়, রাতুল হত্যা মামলায় শিশির আহমেদকে গ্রেফতার করা হয়। আসামির শ্বশুর একদিন তাকে বাড়িতে ডেকে এনে অপমান করলে ক্ষুব্ধ হয়ে তার একমাত্র ছেলেকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেন। এ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত স্কচটেপ ও হ্যান্ড গ্লাভস তার বাড়ি থেকে জব্দ করা হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শিশির বলেন, প্রথমে রাতুলকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আসেন। এরপর চৌগাছার পাটক্ষেতের ভেতরে নিয়ে কোমল পানীয়তে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ান। অজ্ঞান হয়য়ে পড়লে তার গায়ের জামা কেটে তার হাত-পা বাঁধা হয়। সর্বশেষে মুখে স্কচটেপ পেঁচিয়ে তাকে হত্যা করা হয়।
সান নিউজ/এসএ