নিজস্ব প্রতিনিধি,শরীয়তপুর: নাম রাখা হয়েছে ‘কালো বাদশা’। চলন-বলন, দেখতে কালো এবং দেশি খাবার খাওয়ানোর জন্য তার এই নাম । ফ্রিজিয়ান জাতের এ ষাঁড়টিকে শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিতলিয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মীরাকান্দি গ্রামের তরুণী বিলকিস আক্তার আড়াই বছর ধরে লালন-পালন করে আসছেন।
আসন্ন ঈদুল আজহার হাটে এটি হবে অন্যতম চমক। বিলকিসের দাবি এ ষাড়টির ওজন ২৩ মণ, দাম হাঁকাচ্ছেন ১৫ লাখ টাকা। তবে বাড়ি থেকে কেউ কিনতে চাইলে দর-দামে বিক্রি করবেন। গরুর হাটসহ সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমেও প্রচার হয়ে আসছে এ জেলার লালনকৃত বিশাল আকৃতির ষাঁড়টি।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সদর উপজেলার মীরাকান্দি গ্রামের বিলকিস আক্তারের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ২৫-৩০ জন মানুষের জটলা। কেউ সেলফি তুলছেন। আবার কেউ শুধু ষাঁড়টির ছবি তুলছেন।
কালো বাদশা নামের ষাঁড়ের লালন-পালনকারী বিলকিস আক্তারের বড় ভাই মো. জাকির হোসেন ও মো. ফেরদাউস আহমেদ বলেন, ষাঁড়টির দৈর্ঘ্য ১০ ফুট, উচ্চতা ৬ ফুট। ৯২০ কেজি বা ২৩ মণ। ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়টির নাম ‘কালো বাদশা’। কোরবানিতে এর দাম হাঁকা হয়েছে ১৫ লাখ টাকা।
তারা বলেন, বোন প্রতিদিন সাধারণ গোখাদ্যের পাশা-পাশি ষাঁড়টিকে গোসল করান শ্যাম্পু দিয়ে। তার জন্য ২টি ফ্যান সবসময় চালু রাখা হয়েছে।
তারা জানান, ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে তাদের বাবা হাজী এসকান্দার ব্যাপারী কুষ্টিয়া জেলা থেকে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ষাঁড়টি কিনে আনেন। পরে তার বোন বিলকিস আক্তার ষাঁড়টি লালন-পালন করে। প্রয়োজন মতো খাবার ও পরিচর্যায় গরুর আকৃতি বাড়তে থাকে।
দিন দিন গরুটির ওজন বেড়ে ৯২০ কেজিতে এসে দাঁড়ায়। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ডিজিটাল স্কেলের মাধ্যমে গরুটির ওজন নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ বছর গরুটি বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়েছে।
প্রতিদিন অনেক মানুষ এক নজর দেখার জন্য আসছেন বিলকিস আক্তারের বাড়িতে। কেউ সেলফিসহ ছবি তোলে আপলোড দিচ্ছেন ফেসবুকে।
ষাঁড়টিকে দেখতে আসা আবরান শিকদার বলেন, অনেক আগে থেকেই শুনে আসছি অনেক বড় একটি ষাঁড় লালন-পালন করে আসছেন মীরাকান্দি গ্রামে। তাই দেখতে আসলাম।
মীরাকান্দি গ্রামের মো. শাহীন বলেন, একজন মেয়ে হয়ে ষাঁড়টি লালন-পালন করেছে। বিলকিসকে ধন্যবাদ জানিই। আশা করি বাজারে ষাঁড়টির ভালো দাম পাবে।
ষাঁড়ের লালন-পালনকারী বিলকিস আক্তার বলেন, আদর করে ষাঁড়টির নাম রেখেছি ‘কালো বাদশা’। আমার খুব আদরের। যত্ন করে লালন-পালন করেছি। সে আমার পরিবারের সদস্যর মতো। তাকে কালো বাদশা বলে ডাকলে আমার দিকে তাকায়। আবার কান নারায়। ষাঁড়টি অনেক শান্ত প্রকৃতির। ষাঁড়টির খাদ্য তালিকায় রয়েছে কাঁচা ঘাস, খড়, গমের ভুসি, চালের কুঁড়া, ভুট্টা, ডালের গুঁড়া ও ছোলা। সব মিলিয়ে দিনে ২০-২২ কেজি খাবার খায় গরুটি। খাবার কম খেলেও দিনে দিনে তার খাবারের চাহিদার পরিমাণ বেড়ে যায়।
বিলকিস আক্তার ষাঁড়টি জেলার সবচেয়ে বড় ওজনের ষাঁড় দাবি করে জানান, ৮ জুলাই পর্যন্ত কালো বাদশার ওজন ২৩ মণ। দাম হাঁকাচ্ছেন ১৫ লাখ টাকা। তবে বাড়ি থেকে কেউ কিনতে চাইলে দর দাম করে বিক্রি করব।
সাননিউজ/এএসএম