নিজস্ব প্রতিনিধি, রূপগঞ্জ : রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড লিমিটেড নামে জুস তৈরির কারখানায় ১৮ ঘণ্টার চেষ্টায়ও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। ভয়াবহ সেই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ার শেল নিক্ষেপ করেছে। এ ঘটনায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ জুলেই) বিকেল থেকে আগুন নিয়ন্ত্রণে পর্যায়ক্রমে কাজ করেছে ডেমরা, কাঞ্চন, সিদ্ধিরগঞ্জ, আড়াইহাজার, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকাসহ ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট। আগুনের ব্যাপকতা কিছু কমায় শুক্রবার সকাল থেকে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট কাজ করছে বলে জানা গেছে।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিন জন শ্রমিকের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে নিহতের সংখ্যা আরও বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে। এখনো ৭০-৮০ জন শ্রমিক ওই ভবনের ভেতরে রয়েছে বলে জানান কারখানার শ্রমিক ও নিখোঁজের স্বজনরা।
নিখোঁজ শ্রমিকদের স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অগ্নিকাণ্ডের সময় ছয়তলা ভবনের চারতলার শ্রমিকরা কেউ বের হতে পারেননি। সিকিউরিটি ইনচার্জ চারতলার কেচি গেটটি বন্ধ করে রাখায় কোনো শ্রমিকই বের হতে পারেনি। প্রতিদিন ৪ তলায় ৭০-৮০ জন শ্রমিক কাজ করতেন। চতুর্থ তলার শ্রমিকদের ইনচার্জ মাহবুব, সুফিয়া, তাকিয়া, আমেনা, রহিমা, রিপন, কম্পা রানী, নাজমুল, মাহমুদ, ওমরিতা, তাছলিমাসহ প্রায় ৭০-৮০ জন শ্রমিকের খবর পাওয়া যাচ্ছে না।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কারখানার চারতলার ভবনের আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। তাছাড়া ধীরে ধীরে আগুনের লেলিহান শিখা চারদিকে ছড়িয়েও পড়ছে। কারণ ভবনের পঞ্চমতলায় ছিল কেমিকেলের গোডাউন।
বৃহস্পতিবার (০৮ জুলাই) বিকেল নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় অবস্থিত সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাশেম ফুডস লিমিটেডের সপ্তম তলা ভবনের নিচ তলার একটি ফ্লোরে হঠাৎ করে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আগুনের লেলিহান শিখা বাড়তে থাকে।
একপর্যায়ে আগুন পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। কালো ধোঁয়ায় গোটা কারখানাটি অন্ধকার হয়ে যায়। শ্রমিকরা ছোটাছুটি করতে শুরু করেন। কেউ কেউ ভবনের ছাদে অবস্থান নেন। এ সময় ঘটনাস্থলেই স্বপ্না রানী ও মিনা আক্তার নামে দুই নারী শ্রমিক নিহত হন। পরে রাত ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মোরসালিন (২৮) নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়।
সাননিউজ/ এসএ