নিজস্ব প্রতিনিধি, জামালপুর: কঠোর লকডাউনের ৬ দিনের মাথায় রাস্তায় বাড়ছে যানবাহন। অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের হচ্ছে মানুষ। সেই সাথে দ্রুত বাড়ছে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা। করোনা আক্রান্ত হয়ে সর্বশেষ সরিষাবাড়িতে শেফালি বেগম নামে ৫০ বছর বয়সী এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট মৃত্যু ৫৪ জনে দাঁড়াল।
করোনায় মারা যাওয়া ওই নারীটি সরিষাবাড়ি উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের আব্দুল আলীমের স্ত্রী। নমুনা পরীক্ষায় ২ জুলাই তার করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়। ৪ জুলাই ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি।
এছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় ২৯৭ টি নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে আরও ৫৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৫২ শতাংশ। নতুন শনাক্ত নিয়ে জেলায় মোট সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ৩১৩৮ জন। এরমধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় হোম আইসোলেশনে থেকে সদর উপজেলায় ৪০ জন ও সরিষাবাড়ি উপজেলায় ৫ জনসহ ৪৫ জন সুস্থ হয়েছেন। সবমিলিয়ে জেলায় মোট সুস্থ হয়েছেন ২৫৪৪ জন করোনা রোগী।
নতুন শনাক্ত ৫৮ জনের মধ্যে জামালপুর সদর উপজেলায় রয়েছেন ১৩ জন, মেলান্দহ উপজেলায় ৫ জন, মাদারগঞ্জ উপজেলায় ১০ জন, ইসলামপুর উপজেলায় ৫ জন, সরিষাবাড়ি উপজেলায় ১৩ জন, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় ৭ জন ও বকশীগঞ্জ উপজেলায় ৫ জন।
সর্বশেষ এলাকা ভিত্তিক শনাক্ত:
জামালপুর সদর উপজেলার ডিসি অফিসে ২ জন, বোষপাড়ায় ৩ জন, বানাকূড়ায় ১ জন, গোপালপুরে ২ জন, শেখেরভিটায় ১ জন, নয়াপাড়ায় ১ জন, ফায়ার সার্ভিসে ১ জন, মেস্টায় ১ জন ও নান্দিনায় ১ জন। মেলান্দহ উপজেলার উপজেলা পরিষদে ২ জন, হাজরাবাড়ীতে ২ জন ও মেলান্দহে ১ জন।
মাদারগঞ্জ উপজেলার পলিশায় ১ জন, মাদারগঞ্জ সদরে ৩ জন, বীর পাকেরদহে ১ জন, জুনাইলে ১ জন, চরবউলায় ১ জন, বাণীকূঞ্জে ১ জন, পৌরসভায় ১ জন ও বাকারচরে ১ জন। ইসলামপুর উপজেলার ইসলামপুর সদরে ৩ জন, গিলাবাড়ীতে ১ জন ও মলমগঞ্জে ১ জন।
সরিষাবাড়ী উপজেলার আদ্রায় ১ জন, পিংনা বাজারে ১ জন, শেখেরপাড়ায় ১ জন, মাইজবাড়ীতে ১ জন, টিকরাপাড়ায় ১ জন, দৌলতপুরে ২ জন, ধানাটায় ১ জ , পিংনায় ১ জন, তারাকান্দিতে ১ জন, মুলবাড়ীতে ২ জন ও সরিষাবাড়ী সদরে ১ জন। দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার দেওয়ানগঞ্জ সদরে ২ জন, বাজারপাড়ায় ২ জন, চিকাজানীতে ১ জন, পোল্যাকান্দিতে ১ জন ও ডালবাড়ীতে ১ জন।
বকশীগঞ্জ উপজেলার উপজেলা পরিষদে ১ জন, মালীরচরে ১ জন, শ্রীবর্দী পুরাতনে ১ জন, ছড়িপাড়ায় ১ জন ও বাংলাপাড়ায় ১ জন।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে মঙ্গলবার (৬ জুলাই) সিভিল সার্জন ডা. প্রণয় কান্তি দাস জানান, জেলায় করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। বর্তমান পরিস্থিতি সামাল দিতেই নাকানিচুবানি খাচ্ছে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ। যে হারে সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে না। লোকজনের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা ও ঘরের বাইরে আসা ঠেকাতে না পারলে জেলায় করোনা পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হবে।
সাননিউজ/ জেআই