নিজস্ব প্রতিনিধি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ : চাঁপাইনবাবগঞ্জে হোটেল থেকে আনা মোগলাই খাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে মোসা. স্বর্ণা (১৭) ও মোসা. স্বপ্না (১৭) নামে যমজ দুই বোনের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (০৬ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বাসায় স্বর্ণা ও দুপুর দেড়টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে স্বপ্না মারা যায়।
মৃতরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের কালীতলা মহল্লার ব্যবসায়ী সাদিকুল ইসলাম রবির মেয়ে। তারা নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের প্রথম বর্ষের মানবিক বিভাগের ছাত্রী ছিল।
মৃতদের পরিবারের অভিযোগ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের পুরাতন বাজারের হোটেল শাহজাহান সুইটস থেকে নিয়ে আসা মোগলাই খেয়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও স্বর্ণা-সম্পার মা সাবিনা ইয়াসমিন ও সিফাত আলী নামে এক আত্মীয় গুরুতর অসুস্থ হয়েছেন।
মৃতদের বাবা সাদিকুল ইসলাম রবি জানান, গতকাল সোমবার (০৫ জুলাই) বিকেলে তিনি শহরের পুরাতন বাজার এলাকার হোটেল শাহজাহান সুইটস থেকে মোগলাই কিনে বাড়িতে এনে পরিবারের সবার সঙ্গে খান। এরপর রাতে তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন, মেয়ে স্বর্ণা ও স্বপ্না এবং আত্মীয় সিফাত অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদেরকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
পরে স্বর্ণা ও তার মাকে চিকিৎসাসেবা দিয়ে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। অন্যদিকে স্বপ্না ও সিফাতকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাড়িতে আসার পর পরই স্বর্ণা মারা যায়। অন্যদিকে স্বপ্নার অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে দুপুরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানে নেওয়ার পথে বেলা দেড়টার দিকে স্বপ্নাও মারা যায়।
শাহজাহান সুইটস হোটেলের মালিক জামাল উদ্দিন নাসের বলেন, ভোরে সাদিকুল ইসলাম এসে জানান আমার হোটেলের মোগলাই খেয়ে নাকি তাদের পরিবারের কয়েকজন সদস্য অসুস্থ হয়েছে। পরে বেলা ১০টার দিকে তিনি (সাদিকুল) জানান তার এক মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। তবে সাদিকুল ইসলামের পরিবার ছাড়া আর কেউ আমার দোকানের মোগলাই খেয়ে অসুস্থ হননি।
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. নুরুন্নাহার নাসু বলেন, খুব সকালে একই পরিবারের চারজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে স্বর্ণা হাসপাতালে ভর্তির আগেই মারা যায়। স্বপ্নাকে ভর্তি করা হলেও তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
তিনি আরও বলেন, পরিবারের বক্তব্য অনুযায়ী হোটেলের খাবার খেয়ে তারা অসুস্থ হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া সকলের প্রচণ্ড পেট ব্যথা ও বমি হচ্ছিল। সাধারণত খাবারে সমস্যা থাকলে পরিবারের একাধিক সদস্য একসঙ্গে অসুস্থ হয়ে থাকে। তবে ময়নাতদন্ত ছাড়া প্রাথমিকভাবে হোটেলের খাবারের কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে এটি বলা যাবে না।
এ বিষয়ে সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মিন্টু রহমান ঢাকা পোস্টকে জানান, এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত কেউ থানায় কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সান নিউজ/এসএ