আব্দুল্লাহ হেল বাকী,নওগাঁ: নওগাঁর ধামইরহাটের আত্রাই নদীর বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। প্রায় দেড়শো মিটার জায়গা ধসে যাওয়ার যে কোন মুহূর্তে বাঁধ ভেঙ্গে যেতে পারে। এতে লোকালয় এবং শত শত সবজি খেত পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশংকা করছেন গ্রামবাসী। সেই সাথে উপজেলার সাথে জেলা শহরের সড়ক বিচ্ছিন্ন হওয়ায় আশংকা রয়েছে। এখনই ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ হতে পারে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী ।
স্থানীয়ভাবে জানা যায়, উপজেলার আলমপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী মাহী সন্তোষ মাজার এলাকা থেকে উপজেলার ছালিগ্রাম পর্যন্ত আত্রাই নদীর পূর্ব পাড়ে প্রায় ১০ কিলোমিটার বাঁধের রাস্তা রয়েছে। এ বাঁধের পত্নীতলা উপজেলা সদর পর্যন্ত আত্রাই নদীর পূর্ব পাশে ১০ ফুট চওড়া প্রায় ১০ কিলোমিটার বাঁধ সংলগ্ন পাকা রাস্তা রয়েছে। এ বাঁধ গত বছর বাঁধে ধস দেখা দেয়। দীর্ঘ এক বছর ধরে এ বাঁধ মেরামত না করায় যে কোন সময় রাস্তাটি পানিতে তলিয়ে যেতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তা দিয়ে উপজেলার পশ্চিম অঞ্চলের মানুষ স্বল্প সময়ে অতি সহজে উপজেলা দিয়ে জেলা সদরে যেতে পারে। এ সড়ক নির্মাণ হওয়ায় আগে ওই এলাকার লোকজনকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার ঘুরে পত্নীতলায় যেতে হতো। তাছাড়া আত্রাই নদীর তীরবর্তী এলাকার হাজার হাজার কৃষক বিশেষ করে বিভিন্ন ধরণের সবজি চাষিরা তাদের উৎপাদিত ফসল পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর হাট ও বাজারে প্রতিদিন বিক্রি করেন। বর্তমানে আত্রাই নদীর রাঙ্গামাটি জামুরঘাট (লেবুতলা) এলাকার রাস্তা সংলগ্ন বাঁধের প্রায় দেড়শো মিটার এলাকার মাটি পানিতে ধসে গেছে।
ছালি গ্রামের কৃষক মো.আব্দুল খালেক বলেন, এ বাঁধ ভেঙ্গে গেলে রসুলবিল, কেশবপুর, জোতবাটি, ফিসুকুড়ি, আমবাটি, রসোকানা, ভেড়ম, দিলালপুর, হাজরাপুকুর, মল্লিকপুর, দেউলবাড়ীসহ প্রায় ২০-২৫ গ্রামের বাড়িঘর ও শত শত একর জমির সবজি ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যাবে। সেই সাথে রাঙ্গামাটি থেকে পত্নীতলা উপজেলা সদরের যাওয়ারা রাস্তাটি বিচ্ছিন্ন হতে পারে।
সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপজেলা প্রকৌশলী মো.আলী হোসেন বলেন, আত্রাই নদীর বাঁধ ধসে গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটি ভেঙ্গে যেতে পারে। এতে এলাকার হাজার হাজার মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়তে হতে পারে। এলজিআডির পক্ষ থেকে রাস্তাটি প্রশস্ত ও পাকাকরণ করা হয়েছে। কিন্তু আত্রাই নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গত এ বাঁধ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দ্রুত সময়ের মধ্য নদীর গতি প্রবাহের দিক পরিবর্তন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
এ ব্যাপারে নওগাঁর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.আরিফুজ্জামান খান বলেন, বরাদ্দ দেরিতে আসার ওই বাঁধের সংস্কার কাজ করতে বিলম্ব হয়েছে। বর্তমানে প্রায় ৪৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে জিও ব্যাগে বালু ভর্তি করে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধটি ডাম্পিং করার জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। দ্রুত কাজ এগিয়ে চলছে। আশা করি নদীতে পানি প্রবাহ বৃদ্ধির আগে সংস্কার কাজটি শেষ হবে। এছাড়া ধামইরহাটের শীমুলতলী থেকে মহাদেবপুর উপজেলার কালনা পর্যন্ত প্রায় ২৭ কিলোমিটার নদী ড্রেজিং উন্নয়ন প্রকল্প দরপত্র আহবান প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। নদী ড্রেজিং করতে পারলে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধন হবে বলে আশা করা যায়।
সাননিউজ/ জেআই