নিজস্ব প্রতিনিধি, খুলনা : খুলনা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি প্রবীণ সাংবাদিক শাহাবুদ্দিন আহমেদ (৮২) আর নেই। শুক্রবার (২ জুলাই) দিবাগত রাত ৩টায় বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। খুলনা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হাসান আহমেদ মোল্লা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বড় জামে মসজিদে জোহরের নামাজের পর শাহাবুদ্দিন আহমেদের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। ৪৪ বছরের পেশাগত জীবন শেষে বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি ২০০৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর সাংবাদিকতা থেকে অবসর নেন।
উল্লেখ্য, শাহাবুদ্দিন আহমদ ১৯৩৯ সালের ১ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকার মানিকগঞ্জে তার পৈত্রিক ভিটে। বাবার চাকরির সুবাদে খুলনাসহ বিভিন্ন স্থানে লেখাপড়া করেন। সর্বশেষ শিক্ষাজীবন দৌলতপুর সরকারি বিএল কলেজ। তিনি ১৯৬২ সালে শরীফ কমিশন রিপোর্ট বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন। পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। শিক্ষাজীবন শেষে তৎকালীন রূপসা থানার বেলফুলিয়া ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ফাতিমা উচ্চ বিদ্যালয় এবং চালনা পোর্ট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষাকতা করেন। ১৯৬৫ সালে খুলনার স্থানীয় ওয়েভ পত্রিকার মাধ্যমে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত হন। ৪৪ বছরের পেশাগত জীবনে সাপ্তাহিক হলিডে, বাংলাদেশ টাইমস, দি ডেইলি টেলিগ্রাফ, ডেইলি ফিন্যানশিয়াল এক্সপ্রেস ও দি ডেইলি ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকায় কর্মরত ছিলেন। ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকায় ১৩ বছর দায়িত্ব পালন শেষে বার্ধক্যজনিত কারণে ২০০৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর সাংবাদিকতা থেকে অবসর নেন। তিনি ১৯৭০-৭১ সালে করাচির প্রভাবশালী দৈনিক ডন পত্রিকার খুলনা প্রতিনিধি ছিলেন। তিনি ১৯৮০, ১৯৮২ ও ১৯৮৪ সালে অবিভক্ত খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি. ১৯৮৫-৮৬, ১৯৯২-৯৩, ১৯৯৫-৯৬, ১৯৯৯-২০০০ সালে খুলনা প্রেস ক্লাবের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ সালে বাকশালে যোগদান প্রশ্নে স্থানীয় সাংবাদিকদের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত হতে পারেননি। একমাত্র তিনিই বাকশালে যোগ দেননি।
স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের আপদকালীন সাহায্যের জন্য কল্যাণ তহবিল গঠনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন। বস্তুনিষ্ঠ তথ্যের ভিত্তিতে নিখুঁত সংবাদ পরিবেশনে তিনি খুলনার সাংবাদিক অঙ্গনে দৃষ্টান্ত। বানান ও বাক্য গঠনে তিনি যত্নবান ছিলেন। সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদান এবং বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকায় ২০০৮ সালে সাদা মনের মানুষ হিসেবে জেলা প্রশাসন থেকে স্বীকৃতি প্রাপ্ত হন। চিরকুমার এই সাংবাদিক মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ঢাকার বসুন্ধরায় এক নিকটাত্মীয়ের বাসায় অবসর জীবনযাপন করছিলেন।
সান নিউজ/এসএম