নিজস্ব প্রতিনিধি, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অক্সিজেন না পেয়ে আইসিইউতে থাকা চার করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিট থেকে রাত পৌনে ৮টা পর্যন্ত সেন্ট্রাল অক্সিজেন না থাকায় অল্প কয়েকটি সিলিন্ডার দিয়ে রোগীদের সেবা দেয়ার চেষ্টা করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, অক্সিজেনের অভাবে সাত রোগী মারা গেছেন। কিন্তু হাসপাতাল কতৃপক্ষ বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, অক্সিজেন সংকটে নয়, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। কতৃপক্ষ বলছে মৃত্যু হয়েছে চার রোগীর। পাশাপাশি বিষয়টি তদন্তের জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে।
স্বজনদের অভিযোগ, বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিট থেকে রাত পৌনে ৮টার মধ্যে সাত রোগীর মৃত্যু হয় বলে দাবি করেছেন স্বজনরা। তাদের অভিযোগ, ওই এক ঘণ্টার মধ্যেই অক্সিজেন-সংকট হয়।
আইসিইউ ইউনিটে মারা যাওয়া আকরাম হোসেন খানের ছেলে তাজ মুহাম্মদ খান জানান, তার বাবা ৪৫ দিন ধরে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখানে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। অনেক দিন ধরেই এই হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেনে সমস্যা হচ্ছিল। কর্তৃপক্ষ সেদিকে নজর দেয়নি। বুধবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে অক্সিজেন ছিল না। সে সময় তার বাবা মারা যান।
শহরের মাস্টারপাড়ার ফিরোজ হোসেন বলেন, জ্বর ও শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় তার করোনায় আক্রান্ত মেয়ে সীমা খাতুনকে বুধবার দুপুরে আইসিউতে ভর্তি করান। বিকেল ৫টার দিকে সিসিইউ থেকে বের হয়ে একজন চিকিৎসক বলেন, হাসপাতালে অক্সিজেন কমে আসছে। তবে দ্রুত অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। স্বজনরা চাইলে তাদের রোগীকে অন্যত্র নিয়ে যেতে পারেন।
ফিরোজ জানান, এরপর সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিট থেকে রাত পৌনে ৮টা পর্যন্ত সেন্ট্রাল অক্সিজেন না থাকায় অল্প কয়েকটি সিলিন্ডার দিয়ে রোগীদের সেবা দেয়ার চেষ্টা করা হয়। এরপরও তার মেয়েসহ সাত রোগীর মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক কুদরত-ই-খোদা বলেন, গতকাল যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে অক্সিজেনের প্রেশার কমে যায়। তখন আইসিইউর মধ্যে চারজন রোগী মারা যান। অক্সিজেন ঠিক ছিল। অক্সিজেনের কোনো ঘাটতি ছিল না। তবে কী কারণে অক্সিজেনের প্রেশার কমে গেল, তা তদন্তে মেডিসিন বিভাগের প্রধান কাজী আরিফ আহমেদকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন দিনের মধ্যে তারা প্রতিবেদন দাখিল করবেন।
জেলার সিভিল সার্জন হুসাইন শাফায়াত বলেন, হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেনের সংকট দেখা দেয়ার কথা ছিল না। সেন্ট্রাল অক্সিজেন ছাড়াও ৭০টির বেশি সিলিন্ডার আছে। এখানে কর্তৃপক্ষের কোনো গাফিলতি ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।
সাননিউজ/জেআই