নিজস্ব প্রতিনিধি, ভোলা: ভোলার লালমোহনে ৩৩৩-এ খাদ্যসহায়তা চেয়ে ফোন করায় হামলার শিকার হয়েছেন মো. ফারুক নামের এক ভুক্তভোগী। শুক্রবার (২৫ জুন) উপজেলার লর্ডহাডিঞ্জ ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড ফাতেমাবাদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনার বিবরণে ভুক্তভোগী ফারুক বলেন, মহামারি করোনায় অভাব-অনটন ও খাদ্যসংকটে ছিলেন ফারুক। ফারুকের কষ্ট দেখে প্রতিবেশী মো. আলমের মেয়ে রুমা ২৫ জুন ফারুকের জন্য ৩৩৩-এ খাদ্যসহায়তা চেয়ে ফোন করেন এবং ফারুকের পূর্ণ ঠিকানা প্রদান করেন।
ফোনের পরিপেক্ষিতে শুক্রবার বিকেলে ফারুককে ত্রাণ দেওয়া হবে বলে লর্ডহাডিঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ১ নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. হায়দার ও ছালাউদ্দিন দালাল পরিষদে আসতে বলেন। ফারুকও ত্রাণের জন্য পরিষদে গেলে ইউপি চেয়ারম্যানসহ অন্যরা ফারুককে জানতে চান, তিনি কেন ৩৩৩-এ খাদ্যসহায়তা চেয়েছেন।
পরে ইউপি সদস্য হায়দায় ও ছালাউদ্দিন দালাল আলমের স্ত্রী ও মেয়ে রুমাকে ত্রাণ নেওয়ার জন্য ইউনিয়ন পরিষদে আসতে বলেন। আলমের স্ত্রী পরিষদে আসার পর তাদের ফোন করার জন্য অপমান-অপধস্ত করেন এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে বিদায় করে দেন।
মো. ফারুক বলেন, আমি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নেমে বাড়িতে আসার পথে হঠাৎ ৮ থেকে ১০ জন কোনো কথা না বলে আমাকে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে। আমি চিৎকার করলেও কেউ আসেনি। একপর্যায়ে আমাকে মেরে তারা চলে যায়। পরে আমি বাড়িতে চলে আসি। তাদের ভয়ে ডাক্তার দেখাতে যাব, তাও পারিনি।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য হায়দারের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য তার মোবাইল নম্বরে ফোন করলে ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে লর্ডহাডিঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান (ইউপি) আবুল কাশেম মিয়া বলেন, ফারুকে ৩৩৩-এ ফোন করার অপরাধে কোনো মারধর করা হয়নি। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। কিছুদিন আগেও তাকে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষে ত্রাণসামগ্রী দেওয়া হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে যাওয়া পথে কেউ মেরে থাকলে অন্য কোনো কারণে মারতে পারে, এর সঙ্গে ইউনিয়ন পরিষদের কোনো সম্পর্ক নেই।
লালমোহন ইউএনও আল নোমান বলেন, ৩৩৩ চালু করা হয়েছে যারা খাদ্যের অভাবে রয়েছে, তাদের সহায়তা করার জন্য। আমার কাছে ৩৩৩ থেকে একটি এসএমএস আসে যে উপজেলার লর্ডহাডিঞ্জ ইউনিয়নের একজন খাদ্যসহায়তা চেয়েছেন। আমি এসএমএস চেয়ারম্যানকে ফরওয়ার্ড করে বলি খোঁজ নিয়ে তাকে সহায়তা করার জন্য।
তিনি বলেন, ত্রাণের কথা বলে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে মারা হয়েছে, এ বিষয়টি আমি জানি না। তবে মারলে এটা অন্যায় করেছে, যা মোটেই কাম্য নয়। ফারুককে ত্রাণ না দিয়ে উল্টো তাকে মারা হয়েছে, এ বিষয়ে অভিযোগ করলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সাননিউজ/এফএআর