নিজস্ব প্রতিবেদক: দেখতে দেখতে চলে গেল ১৯টি বছর। মা আমেনা বেগমের চোখে শুধু হারানো ছেলেকে খোঁজে ফেরা কিন্তু কোথায় সে খোকা? আমেনা বেগমের রাত-দিন যেন এক সূতায় গাথা। আর সোলায়মান! যে প্রতি মূহুর্তে মানুষকে খবর জানান। সূর্য উঠার আগেই বাসায় দিয়ে আসেন সংবাদপত্র। বাসস্ট্যান্ডে বিক্রি করেন খবরের কাগজ কিন্তু নিজের মায়ের খবর তার কাছে নেই। কি দুঃসহ যন্ত্রণা তার বুকে। সেই সোলায়মান এখন ২৬ বছরের যুবক।
সোলায়মানের বাবা বেল্লাল হোসেন চট্টগ্রামে দিনমজুরের কাজ করে সপরিবারে বসবাস করতেন। এখন থেকে ১৯ বছর আগে স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়ে সাত বছরের ছোট্ট শিশু সোলায়মানকে নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে বরগুনার বেতাগীতে বাবার বাড়ীর উদ্দেশ্য রওয়ানা দেন মা আমেনা। চাঁদপুর লঞ্চঘাট এসে মায়ের কাছ থেকে হারিয়ে যান শিশু সোলায়মান। সেই থেকে শুরু হয় মা-ছেলের বিচ্ছিন্ন জীবনের করুণ কাহিনী।
ছেলেকে হারিয়ে কোথায়ও খুঁজে না পেয়ে পথে পথে ঘুরতে থাকেন আমেনা বেগম। আত্মীয় স্বজনদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে ছেলের খোঁজে অনেকটা মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন তিনি।
জানা গেছে, শিশু সোলায়মানকে চাঁদপুর লঞ্চ ঘাটে কাদঁতে দেখে আলম মোল্লা ও হাফিজা বেগম দম্পতি দেড় বছর লালন পালন করে বরগুনা সরকারী শিশু পরিবারে ভর্তি করে দেন। সেখান থেকে সোলায়মান সাফল্যের সাথে কারিগরি শিক্ষায় উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে। পেশা হিসেবে বেছে নেন সংবাদপত্র বিক্রি।
বরগুনা প্রেসক্লাবের সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর মৃধা সোলায়মানের এই করুণ কাহিনী জানতে পেরে গত ১৮ জুন ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। তার সেই স্ট্যাটাসের সূত্রে বেতাগী উপজেলার পার্শ্ববর্তী আমড়াগাছিয়া এলাকায় ২২ জুন সোলায়মানের মায়ের সন্ধান মেলে।
সংবাদপত্র বিক্রেতা সোলায়মান বলেন, আল্লাহর কাছে অনেক শুকরিয়া ১৯ বছর পরে হলেও মাকে কাছে পেয়ে আমি এখন ভালোই কাটাচ্ছি। মা আমেনা বেগমও খুশীতে আত্মহারা। আমেনা বেগম বলেন, অনেকদিন পর অইলেও ছেলেরে পাইয়া সুহেই আছি। য্যারা লইয়া আইছে হেগো আল্লায় বাঁচাইয়া রাহুক।
সাননিউজ/এফএআর