নিজস্ব প্রতিনিধি,বরগুনা: একদিকে লকডাউন অন্যদিকে প্রজনন, উৎপাদন, সামুদ্রিক সম্পদ সংরক্ষণ রক্ষায় মাছ ধরতে নিষেধাজ্ঞা এসবের মধ্যে বরগুনা জেলার তালতলীর উপকূলীয় জেলের পরছে মহা বিপাকে। পরিবার-পরিজন নিয়ে এখন তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। অনেকেই ধার দেনা করে সংসার চালাচ্ছেন। জেলেদের মধ্যে অনেকে পেশা পরিবর্তন করতে চাইছেন।
প্রজনন, উৎপাদন, সামুদ্রিক সম্পদ সংরক্ষণ এবং টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য গত ১৯ মে থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের সমুদ্রে মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ করেছে সরকার।
নিশানবাড়ীয়া এলাকার জেলে জাকির মিয়া বলেন, প্রায় ৫ লাখ টাকা ঋণ করে নতুন ট্রলার নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ছিলেন তিনি। কিছুদিন মাছ ধরার পরই শুরু হয় নিষেধাজ্ঞা। আর নিষেধাজ্ঞার এই সময়টায় ঋণের কিস্তি দিতে হিমশিম অবস্থায় দিন পার করছেন। এখন মাথার উপর ঋণের বোঝা পরিবার-পরিজন নিয়ে খুব দুর্ভোগে আছেন।
নিদ্রা এলাকার কয়েকজন জেলেরা বলেন, সাগরে তেমন মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। এর মধ্যেই করোনা ভাইরাস। সর্বশেষ সাগরে মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা সব মিলিয়ে আমাদের জীবন চাকা যেন ভেঙে গেছে। আমরা সাগরে মাছ ধরি, কিন্তু ৬৫ দিনের জন্য মাছ ধরা বন্ধ থাকায় আমরা বেকার হয়ে পড়ছি। ধার দেনা করে দিন কাটাতে হয়। বাড়িতে বেকার বসে আছি।
এছাড়াও আরও কয়েকজন জেলে জানান, একবার সাগরে গেলে তারা ফিরে আসেন ৫-১৫ দিন পর। যে মাছ পান তা বিক্রি করে অন্তত ৩-৫ লাখ টাকা বা তার চেয়েও কিছু বেশি টাকা পান। কিন্তু মাছ ধরা বন্ধ তাই বেকার হয়ে পড়েছেন তারা।
জেলেদের দাবি, সরকারের পক্ষ থেকে জেলে পুনর্বাসনের বরাদ্দ আরও বাড়িয়ে দিলে কিছুটা হলেও সংকট দূর হতো। জেলেরা বলছেন, তারা শুধু সাগরে মাছ ধরে থাকেন। এ মাছের উপরই তাদের জীবন-জীবিকা। মাছ ধরা বন্ধ থাকলে তাদের আয় বন্ধ হয়ে যায়, তাই ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞাকালে বরাদ্দ যেন বাড়িয়ে দেওয়া হয়।
বরগুনা জেলায় মোট নিবন্ধিত জেলে রয়েছে ৩৬ হাজার ২২ জন। তার মধ্যে সমুদ্রগামী ২৭ হাজার ২৭৭ জেলে পাবে খাদ্য সহায়তা ৮৬ কেজি করে চাল।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব জানান, সাগরে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞায় জেলেদের বরাদ্দ বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করব।
সাননিউজ/জেআই