নিজস্ব প্রতিনিধি, চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার গড়গড়ি গ্রামে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় বাড়ি লকডাউন এবং পারিবারিক হেয় প্রতিপন্ন হওয়ার কারণে পরিবার ও সমাজের প্রতি অভিমান করে কৃষক আব্দুর রাজ্জাক নিজ ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে (৪৮) আত্মহত্যা করেছেন।
রোববার (২০ জুন) সকালে এই নির্মম আত্মহত্যার এঘটনা ঘটে।
সামাজিক অবহেলার শিকার নিহত কৃষক আব্দুর রাজ্জাক আলমডাঙ্গা উপজেলার গড়গড়ি গ্রামের শাহাজুদ্দিনের ছেলে।
আলমডাঙ্গার থানার অফিসার ইনচার্জ আলমগীর হোসেন জানান, গড়গড়ি গ্রামের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক গত কয়েকদিন থেকে জ্বর, ঠাণ্ডা ও শ্বাসকষ্ট রোগে ভুগছিলেন। গত ১৬ জুন নমুনায় (র্যাপিড টেস্টে) ওই দিনই তার করোনা পজিটিভ হয়। এরপর তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। পরে আব্দুর রাজ্জাক ছাড়পত্র নিয়ে বাড়িতে আইসোলেশনে ছিলেন। বাড়িতে আসার পর উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে তাদের বাড়ি লকডাউন করে দেন। এতে পরিবারে ও সমাজের অন্যান্য মানুষ তাকে কটুক্তি ও সামাজিক হেয় প্রতিপন্ন করে। এসবের কারণে ক্ষোভে দুঃক্ষে রোববার সকালে কোন এক সময় নিজ ঘরে গলাই ফাঁস দিয়ে আব্দুর রাজ্জাক আত্মহত্যা করেন। সকালে পরিবারের লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। তারপর অপমৃত্যুর মামলা দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়।
আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী ময়না খাতুন বলেন, আমার স্বামীর করোনা শনাক্তের পর হাসপাতালে ছিল। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। বাড়িতে আসার পর আমরা সবাই তার থেকে বিছিন্ন ছিলাম। হাসপাতালে থাকলে আমার স্বামী আত্মহত্যা করতো না।
জেহালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল হক রোকন বলেন, তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। তার বাড়িটি উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে লকডাউন করে দেয়া হয়েছিল। এরপর থেকে এলাকার লোকজন বিভিন্ন মন্তব্য করতেন। সামাজিক হেয় প্রতিপন্ন হওয়ায় মান অভিমানে আব্দুর রাজ্জাক সকালে আত্মহত্যা করেছেন।
সান নিউজ/ আরএস