নিজস্ব প্রতিনিধি, রংপুর : রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের রোগীর বেড বাড়িতে নিয়ে যাবার পথে এক চিকিৎসককে হাতেনাতে আটক করেছে স্থানীয়রা। বুধবার (১৬ জুন) দুপুর দেড়টার দিকে নগরীর বুড়িরহাট রোড ডক্টরস ক্লিনিকের সামনে এ ঘটনা ঘটে। একটি ভ্যানে করে বেডটি নিয়ে যাবার সময় স্থানীয়রা আটক করে।
এ ঘটনাকে চুরি বা পাচার বলে দাবি করে স্থানীয়রা। দুই দফায় ওই চিকিৎসকের সঙ্গে স্থানীয়দের বাগবিতণ্ডা হয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে বেডটি উদ্ধার করে হাসপাতালে পৌঁছে দেন তারা।
অভিযুক্ত চিকিৎসক একেএম শাহীনুর রহমান হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের মেডিকেল অফিসার। পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে হাসপাতালে চাকরি করছেন। তার গ্রামের বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জে।
শাহীনুর রহমান জানান, তার মা দেড় মাস ধরে হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছে। শারীরিক অবস্থা খুব একটা ভালো না। বর্তমানে তার মাকে কেবিনে রাখা হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়িতে নেয়ার কথা চলছিল। বাড়িতে যাতে বেডে থাকতে অসুবিধা না হয়, এ কারণে হাসপাতাল থেকে একটি বেড মুচলেকা দিয়ে গ্রহণ করেন। বুধবার বিকেলে বেডটি বাড়িতে নিয়ে যাবার পথে স্থানীয়দের সন্দেহ হওয়াতে তা আটক করে এবং বিভিন্নভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকে। পরে তাদের উপস্থিতিতে বেডটি হাসপাতালে ফেরত দেন।
তিনি বলেন, আমি দীর্ঘ পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে হাসপাতালে নবম গ্রেডের কর্মকর্তা হিসেবে রয়েছি। হাসপাতালের সম্পদ নষ্ট হোক, এমনটা কখনো করিনি। শুধু মানবিক দিক থেকে নিজের মায়ের থাকার সুবিধার কথা চিন্তা করে স্টোর কিপার বেলাল ও ৩০নং ওয়ার্ড ইনচার্জ মমতাকে অবগত করে মুচলেকার মাধ্যমে বেডটি নিয়েছিলাম। আমার অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। কিন্তু আজকের ঘটনার পর অনুভব করছি, আইনগতভাবে এটা নেয়া আমার ঠিক হয়নি।
এ ব্যাপারে জানতে হাসপাতালের স্টোর কিপার বেলাল হোসেন এবং ৩০নং ওয়ার্ড ইনচার্জ মমতার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাদের পাওয়া যায়নি।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিনিয়র স্টাফ নার্স বলেন, পরিচালকের অনুমতি না নিয়ে বেডটি স্যারের (ডা. শাহীনুর) অসুস্থ মায়ের ব্যবহারের জন্য দেয়া হয়েছিল। এটা চুরি বা পাচারের মতো কোনো ঘটনা কিনা সেটা আমি বলতে পারবো না। কারণ বেডটি শাহীনুর স্যারের জিম্মায় ছিল।
রমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. রেজাউল করিম বলেন, ঘটনাটি আমার জানা নেই। যতটুকু শুনেছি, ওই চিকিৎসক তার মায়ের জন্য স্টোর কিপার ও ওয়ার্ড ইনচার্জকে অবগত হাসপাতালের নতুন ভবনের ৩০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে বেডটি বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে স্থানীয়রা তা আটক করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এ ঘটনার সঙ্গে পাচারের কোনো যোগসূত্র রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে। তবে তাঁর অনুমতি ছাড়াই হাসপাতাল থেকে বেডটি বাহিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে জানান পরিচালক।
সান নিউজ/এমএইচ