নিজস্ব প্রতিনিধি, মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে নদী ও খালে মাছ ধরায় ব্যাপকহারে ব্যবহার হচ্ছে অবৈধ ‘চায়না দোয়ারি’ জাল। উপজেলার বিভিন্ন বাজারে এই জাল বিক্রিও হচ্ছে প্রকাশ্যেই। স্থানীয়রা বলছেন, প্রশাসনের নজরদারি ও ব্যবস্থাপনার অভাবে দিন দিন এর ব্যবহার বাড়ছেই।
গত চার দিনে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার রামকৃষ্ণপুর, বাহাদুরপুর, ঝিটকা, গোপীনাথপুর, আন্ধারমানিক, বলড়া ও ধুলশুড়া পদ্মা ও ইছামতি নদীর বিভিন্ন অংশে শত শত অবৈধ চায়না দোয়ারি জাল দিয়ে মাছ ধরছে। বাঁশের খুঁটি মাটিতে পুঁতে জাল বেঁধে রাখা হয়। সারাদিনে ২/৩ বার জাল থেকে মাছ বের করতে দেখা যায়।
মৎস্য ও প্রাণীবিজ্ঞানীদের মতে, এ জাল বা ফাঁদ বিল,নদী-নালা, খাল ও মুক্ত জলাশয়ের মৎস্য সম্পদের জন্য বিরাট হুমকির। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় তারা দ্রুত এ জালের ব্যবহার বন্ধের পরামর্শ দিচ্ছেন।
জেলেরা জানান, চায়না দোয়ারি এক ধরনের বিশেষ ফাঁদ। এটি প্রায় ৬০ থেকে ৮০ ফুট লম্বা; ছোট ছোট খোপের মতো। মূল্য পাঁচ-আট হাজার টাকা। এ জালে সহজেই প্রচুর মাছ ধরা পড়ে। এজন্যই দিন দিন এর ব্যবহার উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েই চলেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জেলে জানান, উপজেলার ঝিটকা, বলড়া, আন্ধারমানিক ও নয়ারহাট বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি হয় এসব অবৈধ চায়না দোয়ারি। জেলেরা বলেন, চায়না দোয়ারি যদি অবৈধই হয়, তাহলে দোকানদাররা তা প্রকাশ্যে বিক্রি করেন কিভাবে?
এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. সাইফুর রহমান বলেন, চায়না দোয়ারি নিষিদ্ধ এমন কোন লিখিত নির্দেশনা নেই। তবে জালের ফাঁসের ব্যাস অনুযায়ী এ জাল অবৈধ। আমরা দ্রুতই সরেজমিনে তদন্ত সাপেক্ষে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, চায়না দোয়ারি অবৈধ কিনা আমার জানা নেই তবে ‘যদি অবৈধ হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।’
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. সাইফুর রহমান বলেন, ‘চায়না দোয়ারি সম্পূর্ণ অবৈধ। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও স্থানীয় প্রশাসনের চায়না দোয়ারির বিরুদ্ধে অভিযান ও মোবাইল কোর্ট করার কথা। আমি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে এক্ষুনি বলে দিচ্ছি।’
সান নিউজ/ আরএস