নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘকায় মানুষ হিসেবে বিবেচিত কক্সবাজারের জিন্নাত আলীর শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন। বেঁচে ফেরার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
চমেক হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. নোমান খালেদ চৌধুরী ২৭ এপ্রিল সোমবার রাতে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, সকালে জিন্নাত আলীকে যখন নিউরোসার্জারিতে আনা হয়, তখন তিনি অজ্ঞান ছিলেন। ওনার পরিস্থিতি এতই জটিল যে, তার আর জ্ঞান ফেরার সম্ভাবনা নেই। বর্তমানে তিনি হাসপাতালের আইসিইউতে ভেন্টিলেশন সাপোর্টে আছেন।
অধ্যাপক ডা. নোমান খালেদ চৌধুরী আরো বলেন, ওনার মস্তিষ্কে টিউমার আছে এবং সেটা খুব বড়। এই মুহূর্তে টিউমার অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অপসারণ ডিফিকাল্ট এবং কোনো সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকেই ওনার মধ্যে হরমোনজনিত অস্বাভাবিকতা আছে। উনি যে এত লম্বা সেটা স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়া নয়। হরমোনের জটিলতার কারণে এটা হয়েছে। এর সঙ্গে মস্তিষ্কে টিউমার পরিস্থিতিকে আরো জটিল করেছে। আমরা আশাবাদী মানুষ, তাই জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে বলছি, অর্থাৎ জীবন শব্দটা উল্লেখ করছি।
কক্সবাজারের রামু উপজেলার গর্জনিয়ার ইউনিয়নের বড়বিল গ্রামের কৃষক আমীর হামজার ছেলে জিন্নাত আলী। জন্ম ১৯৯৬ সালে। আমীর হামজার তিন ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে জিন্নাত তৃতীয়।
২০১৮ সালের ২৪ অক্টোবর জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জিন্নাত আলীকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেসময় গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ১২ বছর বয়স থেকেই উচ্চতা অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকে তার। সে সময় জিন্নাত আলীর উচ্চতা ছিল ৮ ফুট ২ ইঞ্চি।
অস্বাভাবিক লম্বা হওয়ায় শারীরক বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে জিন্নাত প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন। এছাড়া কেউ কাজ না দেয়ায় অভাবে আয়-উপার্জন না থাকার কথাও জানিয়েছিলেন তিনি।
পরে প্রধানমন্ত্রী তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। সেসময় তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি করা হয় তাকে। সুস্থ হয়ে জিন্নাত বাড়ি ফেরত যান।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে আর্থিক সহযোগিতায় জিন্নাতকে তার এলাকায় একটি দোকানও করে দেয়া হয় তখন।
সান নিউজ/সালি