কুদরতে খোদা সবুজ, কুষ্টিয়া : পান চাষের জন্য প্রসিদ্ধ কুষ্টিয়া। বিশেষ করে সদর উপজেলা, মিরপুর, দৌলতপুর ও ভেড়ামারা উপজেলায় ব্যাপক হারে এ অর্থকরী ফসলের আবাদ হয়। এ ফসলের রোগ বালাইও কম নয়। এতোদিন চাষীরা প্রচলিত কীটনাশক ব্যবহার করে বালাই দমন করতো।
যা মানবদেহের জন্য ক্ষতির কারণ। এর থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট (বারি) কুষ্টিয়া অফিস জৈব বালাইনাশক পদ্ধতি উদ্ভাবন করে। এই পদ্ধতি ব্যবহারে ভালো ফল পাচ্ছেন পান চাষিরা। দেশের বাজারের পাশাপাশি বিদেশেও বিষমুক্ত এ পানের চাহিদা বেড়েছে।
এ পদ্ধতিতে পান চাষ করে এক দিকে যেমন স্বাস্থ্যসম্মত পান উৎপাদন হচ্ছে, তেমনি ফলনও বাড়ছে। এতে দেশের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বিদেশেও রফতানি হচ্ছে এই পান।
বারি কুষ্টিয়া অফিসের সরেজমিন গবেষণা বিভাগের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. জাহান আল মাহমুদ বলেন, পান বৃহত্তর কুষ্টিয়া তথা মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার অন্যতম একটি অর্থকারি ফসল। পান চাষের প্রধান সমস্যা কয়েকটি রোগ। যেমন, কান্ড পচা, পাতায় কালো দাগ, লিফ ব্লাইট ইত্যাদি। এছাড়া কিছু পোকা মাকড়েরও আক্রমণ হয়ে থাকে। কৃষক এইসব দমনের জন্য বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক ব্যাবহার করে থাকে।
তিনি জানান, পান যেহেতু মানুষ সরাসরি খায়, সেহেতু এটা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। তারা তিন বছর আগে নিরাপদ উপায়ে পান চাষের উপর গবেষণা কার্যক্রম হাতে নেন। গবেষণা থেকে উদ্ভাবিত পদ্ধতি জৈব বালাইনাশক প্রয়োগে দারুণ সফলতা পাওয়া যাচ্ছে।
প্রকল্প পরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার বলেন, দেশের চাহিদা মিটিয়ে এ অঞ্চলের পান দেশের বাইরেও যায়। তবে বালাই দমনে কীটনাশক ব্যবহারের কারণে অনেক সময় বিদেশিরা এখানকার পান নিতে অনীহা দেখাতো। তবে বর্তমানে কীটনাশকের পরিবর্তে জৈব বালাইনাশক ব্যবহারের ফলে সেই জটিলতা কেটে গেছে। এখন বিদেশে এখানকার পানের চাহিদা বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, জৈব বালাইনাশক পদ্ধতির আওতায় হলুদ আঠালো ফাঁদ, তুঁতে, চুন ও পানির সংমিশ্রণ ইত্যাদি ব্যবহার হচ্ছে। এদিকে, এই পদ্ধতি ব্যবহার করে পানের অনেক রোগ-বালাই কমে গেছে। পাশাপাশি পানের ফলনও বাড়ছে। খুশী পান চাষীরা।
সান নিউজ/এমএইচ