নিজস্ব প্রতিনিধি, রাঙামাটি: এবার রাঙামাটিতে ৫হাজার পরিবার পাহাড় ধসের আশংকায়। জেলা প্রশাসনের নিষিদ্ধ এলাকায় রাঙামাটি শহরের প্রবেশ মুখ মানিকছড়ি হতে রেডিও ষ্টেশন পর্যন্ত প্রধান সড়কের দু’পাশে গড়ে উঠেছে নতুন নতুন অবৈধ স্থাপনা। এসব নতুন নতুন অবৈধ স্থাপনা নির্মাণে দলীয় প্রভাবশালীদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। স্থানীয় সচেতন মহল ও পরিবেশবিদরা বলছে এবার বড় ধরনের পাহাড় ধসের আশংকা রয়েছে। এতে ৫হাজারের অধিক পরিবার ক্ষয় ক্ষতির আশংকায় রয়েছে।
জানাগেছে, গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে শহরের মারী ষ্টেডিয়াম এলাকা, ভেদভেদী, নতুন মুসলিম পাড়া, শিমুলতলী, টিভি সেন্টার ও রুপনগর নিষিদ্ধ এলাকায় শতশত অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। অনেককে আবার এসব অবৈধ স্থাপনা ক্রয় বিক্রয় করতে দেখা গেছে। শিমুলতলী ও রুপ নগর এলাকায় পরিবেশ নষ্ট করে গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধ স্থাপনা। এসব অবৈধ স্থাপনা ও দখলদারিত্ব নিয়ে দাঙ্গা হাঙ্গামাসহ মামলা মোদাদ্দমা করে জেলহাজতে গিয়েছেন অনেকে। এসব অবৈধ স্থাপনা নির্মাণকারীদের পিছনে রয়েছে দলীয় প্রভাবশালী লোকজন।
স্থানীয়রা বলেন, ২০১৭ সালের পাহাড় ধসে আমরা দেখেছি এসব এলাকায় লাশের মিছিল। তারপরও কিছু অসাধু অবৈধ ভূমি সিন্ডিকেট সরকারি খাস জমি-পাহাড় দখল করে এক জায়গা ৩-৪বার ক্রয় বিক্রয় করছে। অপর দিকে জেলা প্রশাসন বলছেন ২০১৭সালে যে সব এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত ও ধ্বংস লীলায় ১২০ জন মারা গেছে ওই এলাকায় স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না, তারপরও প্রশাসনের কথা অমান্য করে ভূমি দস্যুরা অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করছে। আমরা এবারও বড় ধরনের পাহাড় ধসের আশংকা দেখছি। অপর দিকে ২০১৭ সালে পাহাড় ধসে রাস্তা-ঘাটের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। কিন্তু পাহাড় ধসের ৫বছর পেরিয়ে যাচ্ছে এখনও রাস্তা-ঘাটের উন্নতি হয়নি।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, আপনারা অবশ্যই আবগত আছেন সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে পাহাড় ধস নিয়ে ইতিমধ্যে জনসচেতনতামূলক মাইকিং, লিফলেট বিতরণ ও নিষিদ্ধ এলাকায় সাইন বোড স্থাপন করা হয়েছে। জনগণ যদি আইন অমান্য করে তাহলে পুলিশ দিয়ে ধরে এনে আশ্রয় কেন্দ্রে রাখা হবে। পাহাড় ধস সম্পর্কে জেলা প্রশাসনের আগাম প্রস্তুতি রয়েছে। তারপরও জেলা প্রশাসন সবাইকে সাথে নিয়ে পাহাড় ধস মোকাবিলা করবো। আর যারা অবৈধ ভাবে স্থাপনা নির্মাণ করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে বার বার সর্তক করা হচ্ছে তারপরও সংশোধন না হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
প্রসংগত- ২০১৭ সালের ১৩জুন ভারী বর্ষণের রাঙামাটিতে পাহাড় ধসে ৫ সেনা কর্মকর্তাসহ ১২০ জন নিহত হয়েছে। ২০১৮ সালে জেলার নানিয়ারচর ৮জন ও কাপ্তাই উপজেলায় পাহাড় ধসে ৫ জন নিহত হয়েছে। তারপরও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বসবাস করছে মানুষ।
সান নিউজ/ আরএস