নিজস্ব প্রতিনিধি, লক্ষ্মীপুর: একনেকে মেঘনার ভাঙনরোধ প্রকল্প পাশ করায় লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বের করা মিছিলে হামলার অভিযোগ উঠেছে আ.লীগের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (১ জুন) সন্ধ্যায় উপজেলার হাজিরহাট বাজারে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রামগতি-কমলনগর বাঁচাও মঞ্চের মিছিলে এ ঘটনা ঘটে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুল আমিন রাজুর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ আনা হয়। তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম নুরুল আমিন।
পুলিশ সূত্র জানায়, জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় (একনেক) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘লক্ষীপুরের রামগতি ও কমলনগর উপজেলাধীন বড়খেরী ও লুধুয়াবাজার এবং কাদের পণ্ডিতের হাট এলাকা ভাঙ্গন হতে রক্ষাকল্পে মেঘনা নদীর তীর সংরক্ষণ’ প্রকল্পটি অনুমোদন দিয়েছেন। এ খুশিতে কমলনগর উপজেলা আওয়ামী লীগ ও রামগতি-কমলনগর বাঁচাও মঞ্চ পৃথক আনন্দ মিছিলের আয়োজন করেছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, একনেকে প্রকল্প অনুমোদনের খবর পেয়ে রামগতি-কমলনগর বাঁচাও মঞ্চ বিকেল ৫ টায় আনন্দ মিছিলের আয়োজন করে। তারা এলাকায় মিষ্টিও বিতরণ করেছেন। মিছিলের জন্য পুলিশের অনুমতি নিতে গেলে সময় পরিবর্তন করার জন্য পরামর্শ দেয়। কারণ সরকার দলীয় মিছিল আগে দেওয়ার জন্য এ পরামর্শ দেন। এতে সংগঠনটি মিছিলের সময় পরিবর্তন করেন।
সন্ধ্যায় ঘটনার সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সম্পাদকের নেতৃত্বে আনন্দ মিছিল বের করা হয়। তখন হাজিরহাট বাজারের এক পাশে সাত্তার পালোয়ান ব্যানারসহ লোকজন নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো। এসময় আওয়ামী লীগের নেতারা তাদেরকে নিজেদের মিছিলে অংশ নিতে বলেন। এতে সাত্তার পালোয়ান অস্বীকৃতি জানায়। পরে সাত্তার পালোয়ান মিছিল বের করতেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এসময় সোহাগ নামে সংগঠনটির এক সদস্যের গলা চেপে ধরে আওয়ামী লীগ নেতা রাজু। এক পর্যায়ে সংগঠনটির মিছিলের ব্যানারও ছিঁড়ে ফেলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
রামগতি-কমলনগর বাঁচাও মঞ্চের সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার পালোয়ান বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল আমিন রাজুর নেতৃত্বে আমাদের আনন্দ মিছিলে হামলা করা হয়। তিনি আমার এক সংগঠকের গলা চেপে ধরেছেন। প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের ছবিসহ অভিনন্দন ব্যানারটি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ছিড়ে ফেলেছে। প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য সোমবার (৩১ মে) মেঘনার তীরে আয়োজিত মানববন্ধনটি করতেও নিষেধ করেছে আওয়ামী লীগের নেতারা।
হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম নুরুল আমিন বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েও আমরাও মিছিল করেছি। এ সময় দেখি সাত্তার পালোয়ান একটি ব্যানারসহ লোকজন নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তাকে আমাদের মিছিলে অংশগ্রহণ করতে বললে, তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। এরপরে কে বা কারা তাদের মিছিলে পেছন থেকে হামলা করেছে। তবে ঘটনাটির সঙ্গে আওয়ামী লীগের কেউই জড়িত নয়। তাদের ব্যানার ছেড়ার বিষয়টিও জানি না।
কমলনগত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন বলেন, "ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। হামলার ঘটনা ঘটেনি। প্রধানমন্ত্রী ছবি সম্বলিত ব্যানার ছেড়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ সতর্ক রয়েছে।"
সান নিউজ/ আরএস