নিজস্ব প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংবাদ সংগ্রহের সময় বাকবিতণ্ডার জেরে দৈনিক প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শাহাদৎ হোসেনকে মারধোরের ঘটনা ঘটেছে। রোমান নামে এক ছাত্রলীগ ক্যাডার তার গায়ে হাত তোলে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (১ জুন) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন পুনঃসংস্কারের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধন শেষে স্টেশন প্লাটফর্মের ভেতরে এ অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। পরে সেখানে উপস্থিত অন্যান্য সহকর্মীরা উদ্ধার করে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের উত্তেজনাকে ঘিরে গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন চালুর দাবিতে পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ মঙ্গলবার (১ জুন) দুপুরে স্টেশন চত্বরে এক মানববন্ধনের আয়োজন করেন সচেতন ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী। এতে ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন একাত্ম হয়ে অংশগ্রহণ করে। সংশ্লিষ্ট খবর সংগ্রহের জন্য সাংবাদিকরা সেখানে যান। সেসময় অন্যান্যদের সাথে শাহাদৎ হোসেনও সেখানে অবস্থান করছিলেন।
স্টেশনের গেট কিপার মুরাদুল ইসলামকে সৈনিক লীগ নেতা জুম্মানের ভাই রোমান মারধোর করেছেন শুনে শাহাদৎ যুবলীগ নেতা হাসান সারোয়ারকে জানালে অভিযুক্ত রোমান তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।
একপর্যায়ে রোমান ও তার ভাই সৈনিক লীগ নেতা জুম্মান শাহাদৎকে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি মারতে থাকেন। এদিকে তাকে বাঁচাতে গিয়ে লাঞ্ছিত হয়েছেন ‘দ্য ডেইলি সান’ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি নিয়ামুল ইসলাম আকঞ্জি। পরবর্তীতে সহকর্মীরা শাহাদৎকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
ভুক্তভোগী শাহাদৎ ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, রেলস্টেশনের গেট কিপার মুরাদুল ইসলামকে ছাত্রলীগকর্মী রোমান মারধর করেছেন। বিষয়টি আমি যুবলীগ নেতা হাসান সারোয়ারকে জানালে তিনি আমার উপর চড়াও হন।
এ অনভিপ্রেত ও নিন্দনীয় ঘটনায় জেলার সাংবাদিকমহলে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনা পরবর্তী সময়ে তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় প্রেসক্লাবে জড়ো হয়ে এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ, প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান সাংবাদিকরা। এসময় তারা অভিযুক্ত রোমানকে অবিলম্বে গ্রেফতারের জোর দাবি তোলেন।
পরে ঘটনা সম্পর্কে জানতে পেরে জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকার, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল, সাধারণ সম্পাদক শাহাদত হোসেন শোভনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ প্রেসক্লাবে এসে এই অপ্রীতিকর ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।
আহত শাহাদৎকে দেখতে এসে পুলিশ সুপার মো. আনিসুর রহমান জানান, অভিযুক্তদের অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। জেলা পুলিশের অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন।
সান নিউজ/আরআই