চট্টগ্রাম ব্যূরো : চট্টগ্রামে ফুরিয়ে আসছে বরাদ্দকৃত করোনার টিকা। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যৎ সামান্য লোক করোনার টিকা পাচ্ছে এখন। সোমবার (১৭ মে) থেকে মূলত বেশিরভাগ টিকাদান কেন্দ্রে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেয়া বন্ধ রাখা হয়েছে।
ফলে প্রথম ডোজ নেওয়া চট্টগ্রামের এক লাখেরও বেশি লোক করোনার দ্বিতীয় ডোজ টিকা গ্রহণ নিয়ে চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। এর মধ্যে চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন এলাকায় দ্বিতীয় ডোজের টিকা দিতে না পেরে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভের ঘটনাও ঘটেছে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রামের জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, আমাদের হাতে এখনো কিছু টিকা আছে। সেগুলো যাঁদের প্রথম ডোজ গ্রহণের তিন মাস হয়ে যাচ্ছে তাঁদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেওয়া হচ্ছে। আপাতত টিকার স্টক শেষ। সব মিলিয়ে লাখ খানেক লোক দ্বিতীয় ডোজের টিকা পাচ্ছেন না। এ নিয়ে টিকা গ্রহণকারীদের মাঝে অস্থিরতা বাড়লেও কিছুই করার নেই। পরবর্তীতে টিকা আসলেই উনাদের দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিতে হবে। তখন তিন মাস পার হয়ে গেলেও টিকা আসার সঙ্গে সঙ্গে বাকিদের দেওয়া হবে।
টিকা গ্রহীতাদের ভাষ্য, দ্বিতীয় ডোজ টিকা গ্রহণ না করা পর্যন্ত করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে প্রথম ডোজ টিকা গ্রহণ করেও নিজেদের নিরাপদ মনে করতে পারছি না। ফলে দ্বিতীয় ডোজ টিকা গ্রহণে চরম উদগ্রীব টিকা গ্রহণকারীরা। পরবর্তী টিকা যদি তিন মাসেও না পায় তাহলে কি হবে। এ নিয়ে অস্থিরতা বাড়ছে সবার মাঝে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, গত ১৭ মে পর্যন্ত চট্টগ্রামে ৩ লাখ ৩২ হাজার ৫৫৪ জনকে টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে নগরে ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮৭২ জন এবং উপজেলায় ১ লাখ ৫৪ হাজার ৬৮২ জন। অবশিষ্ট সামান্য পরিমাণ টিকা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেওয়া হচ্ছে।
এরপরও প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার মানুষ টিকার দ্বিতীয় ডোজ এই যাত্রায় পাচ্ছেন না। তাদেরকে অপেক্ষা করতে হবে নতুন টিকা আসা পর্যন্ত। চট্টগ্রামে প্রথম ডোজের টিকা নিয়েছেন ৪ লাখ ৫৩ হাজার ৭৬০ জন। তাদের মধ্যে নগরের ২ লাখ ৫৩ হাজার ২৫৩ জন এবং ২ লাখ ৫০৭ জন উপজেলার বাসিন্দা।
উল্লেখ্য, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের টিকা দিয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি দেশে টিকাদান কর্মসূচি চালু করা হয়েছিল। চুক্তি অনুযায়ী সেরাম থেকে তিন কোটি ডোজ টিকা আসার কথা থাকলেও তারা দুই দফায় বাংলাদেশকে ৭০ লাখ টিকা দিয়েছে। এ বাইরে ভারত সরকার ৩৩ লাখ ডোজ টিকা বাংলাদেশকে উপহার দেয়।
এরই মধ্যে প্রায় ৫৮ লাখ ২০ হাজারের মতো মানুষ প্রথম ডোজের টিকা নিয়েছে। আর দুটি ডোজই নিয়েছেন সাড়ে ৩৬ লাখের মতো মানুষ। অবশিষ্ট টিকাগুলো দেওয়ার পরও সারাদেশে এ দফায় দ্বিতীয় ডোজের টিকা পাচ্ছেন না এমন মানুষের সংখ্যা প্রায় ১৫ লাখ।
সান নিউজ/ আইকে