চট্টগ্রাম ব্যূরো : যশোরের বেনাপোল হয়ে বাংলাদেশে আসা চট্টগ্রামের ২৩ বাসিন্দাকে গত ৭ মে'র পর বিভিন্ন সময়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে কোয়ারান্টাইনে রাখা হয়। তাদের মধ্যে গতকাল ১৩ মে চারজনের করোনা রিপোর্ট পজেটিভ আসে। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রিপোর্ট আসার আগেই তাদের ছেড়ে দেয়।
আর এই চার জন করোনা রোগী এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে চট্টগ্রামে। ফলে চট্টগ্রামে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার সমুহ সম্ভবনার আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। তারা চমেক হাসপাতালের এই ধরণের আচরণকে কাণ্ডজ্ঞানহীন বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
চট্টগ্রাম স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক হাসান শাহরিয়ার কবির বলেন, পুরো বিষয়টা অবহেলা। করোনা রিপোর্ট আসার আগেই কেন তাদের ছেড়ে দেওয়া হলো। তাদের ১৪ দিনের কোয়ারান্টাইন নিশ্চিত করে আবার বাড়িতে ১৪ দিনের কোয়ারান্টাইন নিশ্চিতে পুলিশের সহযোগিতা নেওয়ার নিয়ম। তারা যে আচরণ করেছে তা কাণ্ডজ্ঞানহীন। তাদের কোয়ারান্টাইনের সমস্যা থাকলে সরকারিভাবে হোটেল নির্ধারিত আছে বা সাগরিকায় প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির যে কোয়ারান্টাইন সেন্টার তাও ব্যবহার করত পারতো। কিন্তু এই অব্যবস্থাপনার কোনও অর্থ হয়না।
তিনি বলেন, ওই ব্যক্তিরা ভারতে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন। এখন ভারতে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সবার মেডিকেল পরীক্ষা ও কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক করা হয়। ভারতীয় ভেরিয়েন্ট বাংলাদেশে পাওয়ার কথা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানালেও এবার তা বন্দর নগরী চট্টগ্রামেও ছড়িয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চমেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. রাজীব পালিত বলেন, 'তারা যেদিন আসছিল সেদিন সবার নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। কিন্তু গত ১৩ মে মঙ্গলবার তাদের রিলিজ দেওয়ার জন্য দ্বিতীয় দফায় পরীক্ষা করা হলে চারজনের পজেটিভ আসে।'
তবে রিপোর্ট আসার আগেই তাদের হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আমরা এখন তাদের আবার হাসপাতালে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করছি। ইতোমধ্যে পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
যদিও সিএমপির ডিসি নর্থ মোখলেসুর রহমান বলেন, 'নিয়ম হচ্ছে তারা (চমেক) করোনা নেগেটিভ নিশ্চিত হয়ে রোগী ছাড়বে আর তা আমাদের জানাবে। আমরা তাদের আরও ১৪ দিন কোয়ারান্টাইন নিশ্চিত করব। এখন নেগেটিভ আসার আগেই ছেড়ে দিল, পরে দেখা গেল চারজনের পজেটিভ। এখানে পুলিশের ভূমিকার চেয়ে চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা বেশি। তারা রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে আসুক।'
ভারত ফেরত চার করোনা রোগী হলেন-খুলশী থানার রেলওয়ে কলোনির জাহেদা বেগম (৫০)। সাতকানিয়া উপজেলার পুরানগড়ের মিজানুর রহমান (৩০)। পটিয়া উপজেলার মালিয়ারারের সুলতান আহমেদ (২৪)। হালিশহর বসুন্ধরা আবাসিকের সাজেদা আক্তার (৩২)।
সান নিউজ/আইকে