নিজস্ব প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় কথিত দ্বিতীয় স্ত্রীর দায়ের করা ধর্ষণ মামলাসহ পাঁচটি মামলায় হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হকের তিনদিন করে মোট ১৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (১২ মে) সকালে ভার্চুয়াল কোর্টে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আহমেদ হুমায়ুন কবির এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ড শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান এবং মাওলানা মামুনুল হকের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ওমর ফারুক নয়ন। এ সময় ভার্চুয়াল কোর্টে আসামি মামুনুল হকও যুক্ত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, এর আগে ২ মে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ হুমায়ুন কবিরের আদালতে থানা পুলিশ ও ডিবির পক্ষ থেকে সোনারগাঁ থানায় মামুনুল হকের কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণার মামলায় ১০ দিন, রয়েল রিসোর্ট তাণ্ডবের মামলায় সাতদিন এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের অফিস ভাঙচুরের মামলায় সাতদিনসহ মোট ২৪ দিন রিমান্ড আবেদন করা হয়। পরে আদালত ৯ মে রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেন। সেদিনও মামুনুল হকের অন্য মামলার কার্যক্রম থাকায় রিমান্ড শুনানি ১২ মে নির্ধারণ করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, সোনারগাঁ থানায় দায়ের করা ধর্ষণসহ তিন মামলার রিমান্ড আবেদন করার পর মামুনুল হকের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় দায়ের করা আরও দুটি সহিংসতার মামলায় রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। এতে মোট পাঁচটি মামলায় ভার্চুয়াল কোর্টে শুনানি হয়েছে। শুনানিতে মামুনুল হকের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ওমর ফারুক নয়ন। তিনি রিমান্ডের বিরোধিতা করে মামুনুল হকের পক্ষে বক্তব্য দেন। আর রাষ্ট্রপক্ষে আমি রিমান্ড প্রার্থনা করে আদালতে যুক্তি তুলে ধরেছি। আদালত শুনানি শেষে পাঁচ মামলায় তিনদিন করে ১৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) জায়েদুল আলম জানান, প্রত্যেক মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা যেহেতু ভিন্ন সেহেতু একজন করে তদন্তকারী কর্মকর্ত মামুনুল হককে তিনদিন করে জিজ্ঞাসাবাদের সময় পাবেন।
উল্লেখ্য, গত ৩০ এপ্রিল বিয়ের প্রলোভন, প্রতারণা ও নির্যাতনের অভিযোগ এনে হেফাজতে ইসলামের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে মামলা করেন তার দাবি করা দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণা। মোদিবিরোধী আন্দোলনের নামে রাজধানী ঢাকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হাটহাজারীতে বেপরোয়া তাণ্ডবের পর নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রিসোর্টকাণ্ডে মামুনুল হককে নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাণ্ডবের অভিযোগে একে একে হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতাদের গ্রেফতার করতে থাকে।
এরই ধারাবাহিকতায় মামুনুল হককে গত ১৮ এপ্রিল মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২০২০ সালে দায়ের হওয়া মোহাম্মদপুর থানার একটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে সাতদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে পল্টন ও মতিঝিল থানার পৃথক দুটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
সান নিউজ/এসএম