নিজস্ব প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক হানিফ মুন্সির বিরুদ্ধে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার অভিযোগ উঠেছে। প্রতিপক্ষের তিন শতাধিক ঘর বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করে সর্বশান্ত করার পর উল্টো মামলায় ফাঁসানো হয়েছে তাদের।
এসব অত্যাচার নির্যাতনের প্রতিবাদে রোববার (৯ মে) দুপুরে অর্ধশত নারী ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
আশুগঞ্জ উপজেলার চরচারতলা গ্রামের চারটি বংশের ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর পক্ষে এ সাংবাদ সম্মেলন করা হয়। মামলার দায়েরের পর থেকেই ভুক্তভোগীরা গ্রামছাড়া হয়ে আছেন। নিরাপত্তাহীনতায় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন নারীরাও। ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নার্গিস বেগম বলেন, গত ২২ জানুয়ারি রাতে চরচারতলা গ্রামের লতিফ বাড়ি ও মুন্সি বাড়ি গোষ্ঠির মধ্যে ঝগড়া হয়।
অন্ধকারে সংগঠিত ওই ঝগড়ায় কে বা কার টেঁটার আঘাতে উপজেলা চেয়ারম্যান হানিফ মুন্সির ভাই জামাল মুন্সি নিহত হন।
পরবর্তীতে জামাল মুন্সির বড় ভাই জাহাঙ্গীর মুন্সি বাদী হয়ে ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আর ২০-২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকেই প্রতিপক্ষের ওপর অমানবিক নির্যাতন চলে।
তিনি বলেন, হানিফ মুন্সির নেতৃত্বে লতিফ বাড়ি, খাঁ বাড়ি,খন্দকার বাড়ি ও নাগর বাড়ি বংশের তিন শতাধিক ঘর-বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর লুটতরাজ চালানো হয়। ওই চার বংশের ৬০-৬৫টি প্রবাসী পরিবারও এই লুটতরাজের শিকার হয়।
নার্গিস বলেন, আমাদের ঘরে এখন ভাত খাবার জন্য থালা-বাটিও নেই। এ ঘটনায় আশুগঞ্জ থানায় মামলা করতে গেলে ওসি মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরবর্তীতে আদালতে আমরা ৮টি মামলা করি। আদালত মামলাগুলো পিবিআই ও সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেন। কিন্তু হানিফ মুন্সির প্রভাবে মামলার তদন্ত কাজও বন্ধ হয়ে যায়। এই রোজার মাসেও আমরা নিজ বাড়িতে থাকতে পারছিনা। রোহিঙ্গাদের মতো অন্যদের বাড়ি গিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, হানিফ মুন্সি আওয়ামী লীগের দলীয় পদের অপব্যাবহার করে আমাদেরকে সর্বশান্ত করে পথে বসিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সহানুভূতি কামনা করছি, আমাদেরকে হানিফ মুন্সির হাত থেকে বাঁচান। হানিফ মুন্সিসহ যারা লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগ করে আমাদের পথে বসিয়েছে, তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচারের সম্মুখিন করার দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে চার বংশের ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর পক্ষে সুমি আক্তার, পুতুল বেগম, মনোয়ারা বেগম, জান্নাত, লিলুফা ইয়াছমিন, রুজি বেগম বকুল বেগম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সান নিউজ/আরএস