নিজস্ব প্রতিনিধি, ফেনী : ফেনীতে তানিশা ইসলাম (১১) নামে এক কিশোরীকে পারিবারিক ক্ষোভ থেকেই হত্যা করেছে তার চাচাত ভাই আক্তার হোসেন নিশান (১৪)।
শনিবার (৮ মে) দুপুর ১২টায় সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরুন্নবী।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (৬ মে) রাতে ফেনী সদর উপজেলার কালিদহ ইউনিয়নের মাইজবাড়িয়া এলাকার নিজ বাড়ির ওপর থেকে কিশোরী তানিশার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাৎক্ষণিক প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সন্দেহজনক তানিশার জেঠাতো ভাই নিশানকে আটক করা হয়।
এ ঘটনায় শুক্রবার তানিশার বড় ভাই আশ্রাফুল ইসলাম হাসনাত বাদী হয়ে ফেনী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরুন্নবী জানান, তানিশা ও নিশান চাচাতো ভাই-বোন। নিশানের বাবা প্রায় একযুগ আগে মারা যান। এর পর থেকে নিশানের পরিবার তানিশাদের পরিবারের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। এতে করে ওই সংসারে অনেক সময় তানিশার পরিবার নিশান ও তার পরিবারকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতো। সেই ক্ষোভ থেকেই সুযোগ বুঝে নিশান তার চাচাতো বোন তানিশাকে হত্যা করে।
এদিকে, আটক নিশান ফেনী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সরাফ উদ্দিনের আদালতে ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।
এ সময় নিশান জানায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে শিশু তানিশাকে বাসায় একা রেখে মা ও বোন পাশের বাড়িতে যান। সে সুযোগে পরিকল্পিত ভাবে নিশান ঘরে ঢুকে এবং তানিশাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায় তানিশাকে গলাটিপে হত্যাচেষ্টা করে। পরে তানিশা অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে টেনে হেঁচড়ে বাড়ির দোতলায় নিয়ে সিলিংয়ের সঙ্গে শক্ত দড়ি বেঁধে গলায় ফাঁস দিতে গিয়েও ব্যর্থ হয় নিশান।
এ সময় পাশে পড়ে থাকা একটি আম কাটার ধারালো ছুরি দিয়ে গলায় আঘাত করে হত্যা নিশ্চিত করা হয়। জবানবন্দি রেকর্ড শেষে আদালত নিশানকে ঢাকায় কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
পুলিশ জানায়, ওই দিন খবর পেয়ে তানিশার মরদেহটি উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর পর তদন্ত শুরু করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া একজোড়া স্যান্ডেলের সূত্র ধরে তানিশার চাচাত ভাই অষ্টম শ্রেণির ছাত্র নিশানকে আটক করা হয়। তার দেয়া তথ্যে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি বাড়ির ছাদ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
সান নিউজ/কেটি