নিজস্ব প্রতিনিধি,চাঁদপুর: চাঁদপুরে শহরের ওয়ারলেস বাজার এলাকায় এক বছর ধরে গৃহকর্মীকে ধর্ষণ করেছেন আমজাদ মাহমুদ নিলয় (২১) নামের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী।
বিষয়টি একাধিকবার নিলয়ের মা-বাবাকে জানিয়েও প্রতিকার পাননি ওই তরুণী। সবশেষ গত ৩০ এপ্রিল বাসা থেকে পালিয়ে সড়কে এসে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি।
বিষয়টি চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদের নজরে আসলে তিনি ঘটনার শিকার তরুণীকে উদ্ধার করে সদর মডেল থানা পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত নিলয়ের মা শাহনাজ বেগমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নিলয় ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলার চরশফী গ্রামের আব্দুল মাজেদের ছেলে। বর্তমানে তিনি পলাতক।
পুলিশ জানায়, চাঁদপুর শহরের ওয়ারলেস বাজার এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ বরকন্দাজের বাড়িতে ভাড়া বাসায় থাকেন চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এ কর্মরত আব্দুল মাজেদ ও শাহনাজ বেগম দম্পতি। তাদের বাসায় দীর্ঘ চার বছর কাজ করে আসছিল ভুক্তভোগী ওই তরুণী।
এসময় তাকে কোনো পারিশ্রমিক দেননি এই দম্পতি। বরং তাদের বড় ছেলে ঢাকার একটি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া আমজাদ মাহমুদ নিলয় এক বছর ধরে তাকে ধর্ষণ করে আসছিলেন।
পুলিশ আরও জানায়, করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় বাবা-মায়ের সঙ্গে চাঁদপুরের বাসাতেই থাকা শুরু করেন নিলয়। তার বাবা-মা যখন কর্মস্থলে চলে যেতেন তখনই ওই গৃহকর্মীকে একা পেয়ে ধর্ষণ করতেন। বিষয়টি নিলয়ের বাবা এবং মাকে জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি অসহায় ওই গৃহকর্মী। উল্টো শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনসহ বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে ভিকটিমকে চুপ থাকতে বাধ্য করা হয়।
সর্বশেষ গত ১৪ এপ্রিল দুপুরে আব্দুল মাজেদ দম্পতি অফিসে গেলে নিলয় তাকে আবারো ধর্ষণ করেন। তরুণী ঘটনা বাবা-মার কাছে জানালে তারা তাকে নির্যাতন করেন। এ অবস্থায় ওই তরুণী দীর্ঘ দিনের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গত ৩০ এপ্রিল বাসা থেকে পালিয়ে সড়কে এসে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশিদ জানান, এ ঘটনায় গৃহকর্মী তরুণীর কাছ থেকে বিস্তারিত শুনে ওই পরিবারের তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে।
শনিবার (১ মে) চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভুক্তভোগীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। নিলয়ের মা শাহনাজ বেগমকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সুপার মো. মিলন মাহমুদ বলেন, পুলিশ যাওয়ার আগেই অভিযুক্ত যুবক এবং তার বাবা পালিয়ে যান। আশা করি, খুব দ্রুতই অভিযুক্ত ওই যুবককে গ্রেফতার করতে সক্ষম হব।
সাননিউজ/এএসএম