স্বপন দেব, মৌলভীবাজার : পর্যটন জেলা মৌলভীবাজারে সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে চলছে বিপণীবিতান ও শপিংমলে বেচাকেনা। ঈদকে কাজে লাগিয়ে নিয়মনীতি না মেনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করা হচ্ছে।
করোনা সংক্রমণে পর্যটন ও প্রবাসী অধ্যুষিত মৌলভীবাজার জেলা প্রথমসারির সংক্রমণ ঝুঁকিতে রয়েছে। তার সাথে রয়েছে ভারতীয় সীমান্ত ঘেষা বিভিন্ন চা বাগান ও পান পুঞ্জি। যেখান দিয়ে চলে সহজে গোপন যাতায়াত।
মৌলভীবাজারের বড় বড় শপিংমল, মার্কেটগুলোতে করোনার সংক্রমণ রোধে নেয়া হয়নি তেমন কোন স্বাস্থ্যবিধি রক্ষার ব্যবস্থা। শুধু প্রশাসনের মোবাইল কোর্টের খবর পেলে নড়েচড়ে বসেন ক্রেতা বিক্রেতা। পরে আগের অবস্থায় ফিরে যান ক্রেতা বিক্রেতা। একই অবস্থা জেলার অন্য ছয়টি উপজেলা শহরে।
কুলাউড়া, কমলগঞ্জ, রাজনগর, বড়লেখা, শ্রীমঙ্গল ও জুড়ীতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা মার্কেটগুলোতে দেখা যায়নি স্বাস্থ্য সুরক্ষার কৌশল বা স্বাস্থ্যবিধি নীতিমালা অনুসরণ।
মার্কেটেগুলোতে জনসাধারণের উপস্থিতি যেন করোনার ভয়কেও তুচ্ছ করে চলছে। দেখে মনে হয় দেশে করোনার কোন সংক্রমণই নেই। তাদের কাছে নিজের সৌখিনতাই বড় হয়ে ওঠেছে।
শ্রীমঙ্গল শহরের স্টেশন রোড, ভানুগাছ রোড, পোস্ট অফিস রোড, হবিগঞ্জ রোডের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও মার্কেটগুলোতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ক্রেতা বিক্রেতা উভয়েই মাক্স ব্যবহারে উদাসীন। কোথাও আবার অনেক বেশি মানুষ একসাথে ঘুরছেন মার্কেটগুলোতে।
শ্রীমঙ্গল স্টেশন রোডস্থ খাতুন মার্কেটের রীগ ফ্যাশনের ব্যবসায়ী পরিতোষ দাশ বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই, কিন্ত মার্কেটে আগত ক্রেতা সাধারণের অনেকেই এ ক্ষেত্রে উদাসীন।
প্রভাষক জলি পাল বলেন, দেশের অর্থনৈতিক মন্দা কাটাতে সরকার লকডাউন শিথিল করার উদ্যোগ করেছে কিন্ত মানুষের জীবন এবং জীবিকা দুটোই রক্ষা করা অতীব জরুরি। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন হচ্ছে কিনা সেটা সার্বক্ষণিক মনিটর করাও সরকারের দায়িত্বের ভিতর পরে। কারণ সংক্রমণ বেড়ে গেলে হাসপাতালে যেমন মিলবে না জায়গা, তেমনি সংকটে মানুষের মৃত্যুহার বাড়বে কয়েকগুণ।
শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুস ছালেক বলেন, লকডাউনে ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান ও মার্কেট খোলা রাখার সরকারি সিদ্ধান্ত রয়েছে কিন্ত এ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করতে হবে। কিন্ত যারা সরকারি নির্দেশনা না মেনে ব্যবসা পরিচালনা করবেন তাদের বিরুদ্ধে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সিলেট বিভাগের সাবেক বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হরিপদ রায় বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কোভিড সংক্রমণের ঝুঁকি বিবেচনায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা মোতাবেক সরকার যে নির্দেশনা প্রদান করে তা সকলকে কঠোর ভাবে মেনে চলা উচিত। সাথে প্রশাসনের উচিত সরকারি নির্দেশনা মতো জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে প্রচারণা চালানো যাতে মানুষ স্বাস্থ্যবিধির পালন করাতে বাধ্য হয়।
সান নিউজ/কেটি