নিজস্ব প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত তিন দিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংঘটিত হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এর মধ্যে জেলা গোয়েন্দা শাখা পুলিশের সদস্যরা আট জনকে ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরা দুই জনকে গ্রেফতার করে।
জেলায় তাণ্ডবের ঘটনায় বুধবার (২৮ এপ্রিল) পর্যন্ত ৩৮৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের পুলিশ সুপার কার্যালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।
পিবিআই জানিয়েছে, গত ২৬ মার্চ আনসার ও ভিডিপি’র জেলা কমান্ড্যান্টের কার্যালয় ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জড়িত দুই জনকে আটক করে তারা। লুট হওয়া একটি কম্পিউটার মনিটর, একটি ল্যাপটপ ও একটি টিভি উদ্ধার করা হয়েছে তাদের কাছ থেকে।
আনসার ও ভিডিপি কার্যালয়ে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ আকতারুজ্জামান সরকার তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত মো. ফারুক মিয়াকে (২৪) গ্রেফতার করে।
ফারুকের দেওয়া তথ্য মতে তার কাছে থাকা লুণ্ঠিত একটি কম্পিউটার মনিটর উদ্ধার ও সহযোগী আসামি মো. ইয়াছিন মিয়াকে (২০) গ্রেফতার করা হয়। এরপর ইয়াছিনের দেওয়া তথ্য মতে, তার কাছে থাকা লুণ্ঠিত একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়।
উভয় আসামির দেওয়া তথ্য মতে, এ ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আরেক পলাতক আসামির ঘর তল্লাশি করে একটি ৪০ ইঞ্চি এলইডি টিভি উদ্ধার করা হয়েছে।
তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আকতারুজ্জামানকে জানিয়েছেন, গ্রেফতারকৃত দুই আসামি নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে গত ২৭ এপ্রিল আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
এদিকে, জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৬ মার্চ হেফাজতের তাণ্ডব চলাকালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সম্বলিত ব্যানারে অগ্নিসংযোগকারী মো. মাহমুদুল হাসান শান্ত ও জেলা পুলিশ লাইনসে আক্রমণে জড়িত ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ঘাটুরা গ্রামের হরিনাদী জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ আব্দুর রাকিবসহ আট জনকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা।
সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, হেফাজতে ইসলামের চালানো তাণ্ডবের ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় ৪৯টি, আশুগঞ্জ থানায় চারটি ও সরাইল থানায় দুটি ও আখাউড়া রেলওয়ে থানায় একটিসহ সর্বমোট ৫৬টি মামলায় ৪১৪ জনকে এজাহারনামীয় আসামি ও অজ্ঞাতনামা ৩৯ হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে।
এসব মামলায় এখন পর্যন্ত ৩৮৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সান নিউজ/এনআই/কেটি