নিজস্ব প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হেফাজতের তাণ্ডবের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে হাফেজ আব্দুর রাকিব (৩০) ও মো. মাহমুদুল হাসান শান্ত (২২) নামে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা।
মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) সন্ধ্যার দিকে জেলা সদরের শিমরাইলকান্দি ও ঘটুরা থেকে পৃথক অভিযানে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার হাফেজ আব্দুর রাকিব জেলার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুরের মৃত আ. বাছিরের ছেলে ও ঘাটুরা হরিনাদী জামে মসজিদের ইমাম এবং মাহমুদুল হাসান শান্ত শিমরাইলকান্দি এলাকার খতমে নবুওয়ত মাদরাসার ছাত্র।
গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লোকমান হোসেন।
তিনি জানান, হাফেজ আব্দুর রাকিব গত ২৬ মার্চ থেকে ২৮ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের সহিংসতার ঘটনায় জড়িত ছিলেন। তিনি জেলা পুলিশ লাইনে পরিকল্পনা করে দলবল নিয়ে হামলা করেন। এরপর অন্যান্য হামলাকারীদের সঙ্গে নিয়ে দোকানে গিয়ে কলা কিনে খান তারা। এ সময় তারা ছবি তুলেন এবং ভিডিও করেন। সেই ছবি ফেসবুকে দেয়ার পর রাকিবকে ছবি ও ভিডিও ফুটেজ অনুযায়ী শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হয়।
এছাড়াও গত ২৬ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের বিভিন্ন স্থাপনা ও রেলস্টেশনে হামলায় জড়িত থাকায় শিমরাইলকান্দি থেকে মাহমুদুল হাসান শান্ত নামে এক মাদরাসাছাত্রকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি রেলস্টেশনের সিগন্যাল সিস্টেমে হামলায় জড়িত ছিলেন বলে জানান ওসি লোকমান।
উল্লেখ্য, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে এবং ঢাকা ও চট্টগ্রামে মাদরাসাছাত্রদের ওপর পুলিশের হামলার খবরে গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক তাণ্ডব চালায় হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা। এ সময় পুলিশ সুপারের কার্যালয়, প্রেসক্লাব, সিভিল সার্জনের কার্যালয়, মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়, পৌরসভা কার্যালয়, জেলা পরিষদ কার্যালয় ও ডাকবাংলো, খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানা ভবন, আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতাঙ্গন, আলাউদ্দিন খাঁ পৌর মিলনায়তন ও শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরসহ ৩৮টি সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।
এই ঘটনায় ৪১৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৩০/৩৫ হাজার জনকে আসামি করে মোট ৫৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) পর্যন্ত এক মাসে ৩৭৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
সান নিউজ/এনআই/কেটি