নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙামাটি : পাহাড়ি বাঙালি সম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামায় ধীরে ধীরে উত্তপ্ত করে তুলেছে বাঘাইছড়ির জনপথ। সম্প্রতি বাঘাইছড়ি উপজেলায় কারণে অকারণে পাহাড়িরা বাঙালিদের ওপর ক্ষীপ্ত হয়ে উঠেছেন। আর পাহাড়িদের এমন কর্মকাণ্ড ক্রমেই প্রকাশ পাচ্ছে।
শনিবার বিকাল ৪টার দিকে উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের আবদুর রব পাশবর্তী ইউনিয়ন সারোয়াতলী গরু নিয়ে গেলে তার কাছে চাঁদা দাবি করে জেএসএস সমর্থিত কর্মীরা। চাঁদা দিতে অপারগতা দেখালে তাকে বেদম মারধর করে উপজাতি জেএসএস সন্ত্রাসীরা।এতে আবদুর রব কে মেরে তার সামনের ৩টি দাঁত ভেঙ্গে দেয় সন্ত্রাসীরা।
একই দিনে রাতে কিছু বাঙালি পাহাড়ি দূরছড়ি মেদেনিপুর এলাকায় মাছ শিকার করতে গেলে উপজাতিরা জেলেদের মাছ শিকারের জাল আগুনে পুড়িয়ে দেয়।
আইনশৃঙ্খলাবাহিনী সূত্রে জানাগেছে, যেহেতু রাতের ঘটনা তাই রোববার সকালে উভয় পক্ষকে ডেকে বিষয়টি নিয়ে সমঝোতায় বসার কথা রয়েছে। এতে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত থাকার কথা।
এদিকে ভিডিও লাইভে এসে উপজাতি যুবকেদের বলতে দেখা গেছে বাঙালিরা কে কোথায় আছো সাহস থাকলে তোমরা আমাদের সাথে যুদ্ধ করতে আসো। ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে বাঙালিদেরে মারতে ধারালো লম্বা দা, কিরিচসহ আধুনিক ধারালো অস্ত্র হাতে নিয়ে বাঙালিদের ডাকছে যুদ্ধে আসার জন্য।
একই দিনে বাঘাইছড়ির ২ জেলেকে চরম মারধর করে উপজাতি সন্ত্রাসীরা। এর সবই হলো পাহাড়ে চাঁদাবাজির কারণ।পরে এ ঘটনা চার দিক ছড়িয়ে পড়লে রাজনগর জোনের চুরাখালী বিজিবি ক্যাম্পের ইনচার্জসহ বিজিবি জোয়ানেরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। উভয় পক্ষকে শান্তনা দিয়ে সমাধানের পথ খুঁজে।
অপর দিকে গত ২১ এপ্রিল উপজেলার আর্যপুর এলাকায় ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল নিয়ে গেলে পাহাড়ি তিন যুবক মিলে ওই বাঙালির মোটরসাইকেল আগুনে পুড়িয়ে দেয়। এভাবে একের পর এক ঘটনা ঘটিয়েই যাচ্ছে পাহাড়ি যুবকরা। এতে বুঝা যাচ্ছে বাঘাইছড়িতে দিন দিন আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটছে। এসব ঘটনার প্রতিবাদে বাঘাইছড়িতে নাগরিক পরিষদ ও সাধারণ জনতা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
আমতলী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ রাসেল চৌধুরী বলেন, আমতলী ও সার্রোয়াতলী ইউনিয়ন সীমানা রেখার পাশাপাশি অবস্থান। পাহাড়ি বাঙালি উভয়ে সহবস্থানে বসবাস করে আসছে। কিন্তু সীমানা দখলের চেষ্টায় কয় দিন পর পর উপজাতিরা বিভিন্ন ইস্যু ধরে বাঙালিদের উপর অন্যায় অত্যাচার করে। তিনি বলেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি যথেষ্ট বলে মনেকরি।
তিনি আরও বলেন,ইতি মধ্যে উপজাতি সন্ত্রাসীরা একের পর ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে। তাই আমাদের দাবি রাঙ্গাপাহাড় এলাকাসহ অতিগুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে সেনা ক্যাম্প বা বিজিবি ক্যাম্প বসানো জরুরি। এমতাবস্থা চলতে থাকলে পাহাড়ে বাঙালি বসবাস কঠিন হয়ে পড়বে। এ সময় তিনি বলেন, এসব ঘটনার পেছনে হাত রয়েছে নবগঠিত জেলা পরিষদ সদস্য ও সাবেক সার্রোয়াতলী ইউপি চেয়ারম্যান প্রিয় নন্দন চাকমার ।
এদিকে জেলা পরিষদ সদস্য প্রিয় নন্দন চাকমা পাল্টা দোষারুপ করে বলেন, আমতলী ইউনিয়নের নাটের গুরু হলো রাসেল চেয়ারম্যান। সে কয় দিন পর পর নতুন নতুন জায় ঝামেলা সৃষ্টি করে। এসব না করলে তার ভালো লাগে না তিনি বলেন,সামনে ইউপি নির্বাচন যার জন্য এসব ঝামেলা সৃষ্টি করতে শুরু করছে রাসেল চেয়ারম্যান। ছোট্ট একটি ঘটনাকে বড় করে তোলা এটা হলো রাসেল চেয়ারম্যানের কাজ। ওইসব এলাকায় যা ঘটছে সকল ঘটনার মূল নায়ক রাসেল।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরিফুল ইসলাম বলেন,এখানকার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।তবে মাঝে মধ্যে কিছু কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছে। সেগুলো নিরসনে আমরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে সমাধানের চেষ্টা করছি। তবে এসবের পেছনে জেএসএসের হাত রয়েছে বলে অনেকে মন্তব্য করছে।
সান নিউজ/আরএস