আসমাউল মুত্তাকিন, নিজস্ব প্রতিনিধি: করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় দেশব্যাপী লকডাউন চলাকালীন গরিব-অসহায়, ছিন্নমূল মানুষেরা পড়েন চরম বেকাদায়। অর্থের যোগান বন্ধ থাকায় অনাহারে-অর্ধাহারে দিন পার করতে হয়েছে তাদের।
ওই সময় দিনাজপুরের পার্বতীপুরে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে থাকা সুবিধাবঞ্চিত মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে আসে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘হ্যালো পার্বতীপুর’।
পার্বতীপুরে একদল উদ্যোমী তরুণদের নিজেদের পকেট খরচের টাকা সাশ্রয়ের মাধ্যমে নিজেরাই পুঁজি তৈরি করে। এই স্বল্প পুঁজি নিয়েই তারা অসহায় মানুষগুলোর পাশে দাঁড়ায়।
সংগঠনের সদস্যরা লক্ষ্য করেন, লকডাউনের পর একদিকে যেমন পাড়া-মহল্লায় ভিক্ষুক বেড়েছে, তেমনিভাবে সুবিধা বঞ্চিত মানুষের খাবারের কষ্টও বেড়ে গেছে। ঠিক তখনই তারা নিজেদের চিন্তা শক্তিকে আরও প্রসারিত করেন। ভাবতে থাকেন, এই মুহূর্তেই তাদের জন্য কিছু একটা করা দরকার।
প্রতিদিন একবার আর্থিক অসংগতি থাকা মানুষের জন্য এক বেলা সুস্বাদু খাবারের ব্যবস্থা করার ক্ষুদ্র এই প্রয়াস শুরু হয়- ‘হ্যালো পার্বতীপুর’র মাধ্যমে। তারা নিজেরাই বাজার করে নিজেরাই রান্না করে সুস্বাদু খাবার। এর নিয়ে যান তাদের নির্দিষ্ট জায়গায়।
তাদের এই রান্না করা খাবার এখন পরিতৃপ্তি জোগাতে অনেকটাই সক্ষম। পার্বতীপুরে ছিন্নমূল মানুষের সংখ্যা কম নয়। তবে স্বল্প পরিসরে হলেও শহরের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এসব ছিন্নমূল মানুষদের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছে সংগঠনটি। আর অর্থের যোগানের পুরোটাই আসছে তাদের পকেট খরচ থেকে।
হ্যালো পার্বতীপুর এর প্রতিষ্ঠাতা সিরাজুল ইসলাম ইমু বলেন, করোনা সংকট সৃষ্টির পর বিভিন্ন সংগঠন এবং সমাজের হৃদয়বান ব্যক্তিরা যে যার মতো মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। আমরাও চেষ্টা করছি, অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর। আমরা সংগঠনের এই সদস্যরা নিজেদের মধ্যে চাঁদা তুলে চেষ্টা করছি প্রতিদিন রান্না করে খাবার বিতরণের। আমাদের ইচ্ছা আছে এই ক্রান্তিকাল কেটে না যাওয়া পর্যন্ত এভাবে এসব মানুষের পাশে দাঁড়াবার। তবে সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিরা যদি আমাদের সহযোগিতা করতেন, আমরা এসব মানুষের কষ্ট কমাতে আরো কিছু করতে পারতাম।
হ্যালো পার্বতীপুর সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত কুমার বিপ্লব বলেন, আমাদের এই কার্যক্রমের প্রথম দিকে সংগঠনের সদস্যদের চাঁদার টাকা দিয়ে পরিচালনা করলেও আমাদের কাজ দেখে অনেকেই আমাদের সহযোগিতা করছেন।কেউ কেউ রান্না করে আমাদের জানাচ্ছেন। আমরা সেগুলো বিতরণ করছি।
সাননিউজ/এএসএম