নিজস্ব প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া: মাঠে মাঠে শুরু হয়েছে বোরো ধান কাটার উৎসব। মাঠজুড়ে এখন সোনালি ধানের সমারোহ। পাকা ধানের শীষ দুলছে বৈশাখী বাতাসে। ধানের মৌ মৌ ঘ্রাণে খুশির ঝিলিক কৃষকের চোখে-মুখে। ধান কাটতে কৃষকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।
ভোরের সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই কৃষক মাঠে ছোটেন স্বর্ণরঙা সেই ধান কাটতে। ধান কাটার সময় তারা কেউ কেউ বিভিন্ন লোক সংগীত গেয়ে ওঠেন।
তাদের গানে মুগ্ধ হয়ে যেন শালিকের ঝাঁক দেয় কিচির-মিচির ডাক! ধানের পাঁজা মাথায় নিয়ে কৃষক যখন আইল পথে পায়ের ছাপ এঁকে হেঁটে যান তখন মনে হয় সূর্যের আলোয় কৃষকের মাথায় স্বর্ণদানা চিকচিক করছে।
লেজঝোলা ফিঙে আর শালিক ঝগড়া করে, তারপর উড়ে যায়। এসব কিছুই দেখার ফুরসত নেই যেনো কৃষকের! মাঠের পাকা ধান কেটে তুলতে হবে গোলায়। সে কাজেই ব্যস্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার কৃষকেরা।
সরাইল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃষিবিদ মর্জিনা আক্তার জানান, এবার উপজেলায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এখন চলছে মাঠে মাঠে ধান কাটার উৎসব।
তিনি জানান, ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকরা যেমন খুশি, তেমনি স্বস্তিতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরও। কৃষিবিদ মর্জিনা আক্তারের তথ্য মতে, এ বছর সরাইল উপজেলায় ১৪ হাজার ৮৮০ হেক্টর জমিতে ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
উপজেলা জুড়ে এখন বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে সেই পাকা ধানের মিষ্টি ঘ্রাণ। দিনভর খাটুনি খেটে ধান কাটার পর মাড়াই শেষে ঘরে তুলছেন কৃষকেরা। তাদের এ কাজে সহযোগিতা করছেন কৃষাণি বধূরাও। আর এভাবেই দেখতে দেখতে গোলা ভরে উঠছে কৃষকের।
গ্রামে গ্রামে চলছে নবান্ন উৎসব। ঋতুচক্রের নিয়মেই হাত ধরে আসে নবান্ন। গ্রামবাংলার মাঠে-খেতে চলছে ধান কাটার মহোৎসব নবান্ন (অর্থ: নতুন অন্ন)। নবান্ন হল নতুন ধান কাটার পর সেই ধান থেকে পাওয়া চালের প্রথম রান্না উপলক্ষে আয়োজিত উৎসব।
সান নিউজ/আরআই