শরিফুল ইসলাম, নড়াইল প্রতিনিধি : রোজা ও করোনাকালে নড়াইলের বিভিন্ন এলাকায় খাবার পানির চরম হাহাকার শুরু হয়েছে। এছাড়া বোরো ধানে সেচ দিতেও কৃষকরা বিড়ম্বনায় পড়েছেন। বিকল্পভাবে পানি উত্তোলনের চেষ্টা করছেন। বৃষ্টি হলে এ সমস্যা অনেকটাই কেটে যাবে বলে আশা স্থানীয়দের।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বৈশাখের কাঠফাটা রোদ আর অনাবৃষ্টির কারণে এ বছর বৃষ্টি না হওয়ায় পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। এলাকা ভেদে পানির স্তর ৩০ থেকে ৪০ ফুট নিচে নেমে গিয়েছে। নড়াইল সদর উপজেলার হবখাল, মাইজপাড়া, শাহাবাদ, চন্ডিবরপুর, আউড়িয়া, তুলারামপুরসহ বেশ কয়েকটি ইউপিতে এবং লোহাগড়া উপজেলার কাশিপুর,
নোয়াগ্রাম, নলদী, লাহুড়িয়া, শালনগর, জয়পুর, লোহাগড়া, ইতনা, কোটাকোল এবং কালিয়া উপজেলার উঁচু এলাকায় টিউবওয়েলে পানি পাচ্ছেনা। অনেক টিউবওয়েলে সামান্য পানি উঠছে। বিশেষ করে নদী ও খালের আশপাশের এলাকায় বেশি সমস্যা হচ্ছে। এসব এলাকায় বিশুদ্ধ পানির অভাব দেখা দিয়েছে।
অনেকেই নদী খাল থেকে পানি তুলে ব্যবহার করছে। অধিকাংশ পুকুরগুলো শুকিয়ে গেছে। আর কিছু কিছু পুকুরে সামান্য পানি থাকলেও তা ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা জানান, এসব এলাকায় চৈত্র মাস থেকে টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। বর্ষার পর থেকে আর বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পানির স্তর অনেক নীচে নেমে গেছে। বিভিন্ন এলাকায় বিকল্প হিসেবে তারা পাইপ বসিয়ে কিছুটা পানি তোলা সম্ভব হচ্ছে। তবে সেসব টিউবওয়েল থেকে পানি নেয়ার জন্য দীর্ঘ লাইন পড়ছে। করোনা আতঙ্ক নিয়েই এসব টিউবওয়েলে লাইন দিচ্ছে পানি নেয়ার জন্য। তাছাড়া রোজার সময় সেহরি ও ইফতারে পানি সংকটে রোজাদারদের কষ্ট বেড়ে গেছে। এদিকে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় অনেক এলাকার বোরো চাষিরা বিপাকে পড়েছেন। গত এক মাসের অধিক সময়ে উঁচু এলাকার বোরো চাষিরা ধানে ঠিকমতো পানি দিতে পারছেন না। অনেকেই বিকল্প পন্থায় নদী ও খাল থেকে পানি দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) নড়াইলের সহকারী প্রকৌশলী (সেচ) রকিবুল হোসেন বলেন, পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার জন্য ভূগর্ভস্থ পানি দিয়ে বোরো চাষ অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। সে কারনে নদী ও খালের পানি দিয়ে সেচকাজ চালানোর জন্য কৃষকদের এগিয়ে আসতে হবে।
বিএডিসির অধীনে নড়াইল জেলায় ২১টি পাওয়ার পাম্পের আওতায় ৪৪৩ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। এসব জমিতে পানি সেচের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হয়নি। কৃষকরা আগ্রহ প্রকাশ করলে নদী বা খালের পানি দিয়ে সেচ প্রকল্প চালুর ক্ষেত্রে বিএডিসি সহযোগিতা করবে।
নড়াইল জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী এম.এম.আবু সালেহ বলেন, ভূগর্ভস্থ পানি বেশি উত্তোলনের কারণে পানির স্তর নিচে নিমে যাচ্ছে। যার কারণে শুষ্ক মৌসুমে অনেক এলাকায় টিউবওয়েলে পানি পাচ্ছে না। তবে বৃষ্টি হলে সমস্যা কেটে যাবে।
সান নিউজ/আরএস