আব্দুল্লাহ হেল বাকী, নওগাঁ প্রতিনিধি: শত বছর পার হলেও সান্তহার-রহনপুর রেলপথ প্রকল্প চালু হচ্ছে না। দেশের উত্তারঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি বাস্তবায়নের জন্য কোন সরকারই এগিয়ে আসেনি। সে দাবি বর্তমানে আঁতুড় ঘরে মৃত্যুর মতোই। উত্তর বঙ্গের অবহেলিত জনপদের একটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি ছিল সান্তহার-রহনপুর রেল লাইন প্রকল্প। এই গণ দাবির প্রেক্ষিতে ১৯১০ সালের দিকে তৎকালিন ইষ্টার্ণ বেঙ্গল ষ্টেট রেলওয়ে একটি জরিপ চালায়। জরিপ দলের নেতা ডেলগ্রীন তার রির্পোটে অবিলম্বে এ রেলপথ নির্মাণের জন্য জোর সুপারিশ করেন।
১৯৪৭ সালে দেশ বিভক্তির পর থেকে উত্তারাঞ্চলের জনগণের এ দাবির প্রেক্ষিতে তৎকালীন পাকিস্থান সরকারের রেলওয়ে বোর্ড ১৯৬৩ সালে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষে পূনরায় কাজ শুরু করে। গঠিত জরিপ দলের তৎকালীন প্রধান মরহুম আশরাফ আলী ডেলগ্রীনের রির্পোটের পক্ষে মতামত প্রকাশ করেন। আশরাফ আলী তার অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে ১৯৪ পৃষ্ঠা লিখিত রিপোর্টে এ প্রকল্পের একটি ব্লু প্রিন্ট ১৯৬৪ সালে তৎকালীন পাকিস্থান সরকারের গর্ভনরের নিকট হস্তান্তর করেন। কিন্তু যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরও রেলওয়ে বোর্ড রহস্য জনক ভাবে হঠাৎ করে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়।
৬৬ মাইল দীর্ঘ সান্তাহার-রহনপুর রেলওয়ে প্রকল্পটি ব্রড ও মিটার গেজ দু‘ধরনের লাইন নির্মিত হওয়ার কথা ছিল। এ নতুন রেল পথে ১১ টি ষ্টেশন রাখার ব্যবস্থা ছিল। ষ্টেশনগুলো নওগাঁ শহর, হাটহাঁপানিয়া, হযরতপুর, জাহাঙ্গীরাবাদ ,মহিষ বাতান, নজিপুর, মধূইল, সাপাহার, পোরশা, মামুদপুর, দাউদপুর। তাছাড়া নওগাঁ ডিগ্রী কলেজের উত্তর ধারে ছোট যমুনা নদীর উপর এবং নজিপুর আত্রই নদীর উপর একটি করে সেতু নির্মানের প্রকল্প অন্তরভুক্ত ছিল।
স্বাধীনতার পূর্ব তৎকালীন পূর্ব পাকিস্থানের সংসদে সে সময় মরহুম আবুল কালাম আজাদ ও মরহুম মোজাফ্ফর রহমান চৌধুরী এ প্রকল্পটির কথা সংসদে উত্থাপন করেছিলেন। স্বাধীনতার পর ১৯৭৯ সালে জাতীয় সংসদে বাজেট আলোচনায় সান্তহার-রহনপুর রেলপথ প্রকল্পটি নিয়ে সেই সময় ব্যাপক আলোচনা হয়েছিল। তবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ উত্তরাঞ্চলের অবহেলিত জনপদ তথা বরেন্দ্র ভুমির আর্থ সামাজিক উন্নয়নে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে তেমন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করে নাই।
এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে অনগ্রসর এ জনপদের উদপাদিত কৃষি পণ্য ধান,পাট, আখ, আম ও লিচু পরিবহনে মূখ্য ভুমিকা রাখতে পারবে বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন।
সান নিউজ/আরএস