নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল : বিয়ের একদিনের মাথায় বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন এক কলেজছাত্রী। এই ঘটনায় সোমবার রাতে মহানগরীর এয়ারপোর্ট থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এর আগে রোববার আনুষ্ঠানিক বিবাহ বন্ধনে আবন্ধ হন মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতি মো. জসীম উদ্দিন। বিয়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পরদিন মামলাটি দায়ের করা হয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ তার বিরুদ্ধে মামলাসহ আইনগত ব্যবস্থা না নিলে সংবাদ সম্মেলনের হুমকি দিয়েছেন অভিযোগকারী কলেজছাত্রী।
অভিযোগকারী ২৫ বছর বয়সী এই তরুণী বরিশাল সিটি কর্পোরেশন এলাকার ২৯ নম্বর ওয়ার্ডস্থ ইছাকাঠী এলাকার বাসিন্দা।
এদিকে, পুলিশ বলছে অভিযোগ দায়েরের পর থেকে ওই তরুণী পুলিশের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। মেডিকেল পরীক্ষার জন্য লোক পাঠিয়ে তাকে থানায় ডাকা হলেও তিনি আসেননি।
লিখিত অভিযোগের বরাত দিয়ে ওসি জানিয়েছেন, ‘২০১৯ সালের ১০ সেপ্টেম্বর তরুণীর বাবা-মা বাড়ির বাইরে যায়। সেই সুযোগে মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতি জসীম উদ্দিন বাড়িতে এসে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তরুণীকে ধর্ষণ করে।
এতে তরুণী গর্ভবতী হয়ে পড়লে জসীম উদ্দিন তাকে গর্ভপাতের ওষুধ খাওয়াতে শুরু করে। পরবর্তীতে তাকে বরিশাল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গর্ভপাত করান বলেও লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘ওই ঘটনার পর থেকে জসীম উদ্দিন বিভিন্ন সময় তাকে বিভিন্ন হোটেলে নিয়ে একই ভাবে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। পরবর্তীতে ওই তরুণী বিয়ের জন্য জসীমকে চাপ সৃষ্টি করে।
সবশেষ গত ৫ মার্চ চাপ দিলে দুদিনের মধ্যে তরুণীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেয় মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি জসীম উদ্দিন। কিন্তু সময় পেরিয়ে গেলেও বিয়ে করেননি তিনি। এক পর্যায়ে জসীম তরুণীকে বিয়ে করা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেয়। এর পর পরই ওই তরুণী জসীমের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত নেন।
এদিকে, ‘মঙ্গলবার দুপুরে তরুণীর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সান নিউজকে বলেন, ‘আমি মামলা করার জন্য থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু পুলিশ মামলা গ্রহণ করেননি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামলা না নিলে আমি সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানাবো। এর আগে মিডিয়ার সামনে কথা বলতে রাজি হননি ওই তরুণী।
তবে মহানগরীর এয়ারপোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কমলেশ চন্দ্র হালদার বলেন, ‘অভিযোগ্যের সত্যতা থাকলে মামলা এবং আইনগত ব্যবস্থা অবশ্যই গ্রহণ করা হবে। আমরা অভিযোগের তদন্ত করছি। তাছাড়া ভিকটিমের মেডিকেল টেস্ট করাতে হবে। এজন্য তাকে বহুবার থানায় আসতে বলা হয়েছে। কিন্তু তিনি আসেননি।
এমনকি ভিকটিমকে ডেকে আনতে তার বাসায় পুলিশ সদস্য পাঠানো হয়েছিলো। কিন্তু তাও সে আসেনি। তরুণী অভিযোগ করলেও তিনি পুলিশকে সহযোগিতা করছেন না। কেনো আসছেন না সে বিষয়টিও স্পষ্ট করছেন না। তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
অপরদিকে, ‘ধর্ষণ বা শারীরিক সম্পর্কের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি জসীম উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আমি বিবাহিত। গত রোববার আমি বিয়ে করেছি। আর যিনি অভিযোগ করেছেন তিনি আমার আত্মীয়। রাজনৈতিক কারণে ওই মেয়েকে ব্যবহার করে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এর আগেও এমন বহু ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন বলেও জানান তিনি।
সান নিউজ/আরএস