নিজস্ব প্রতিবেদক, শরীয়তপুর: সারাদেশের ন্যায় শরীয়তপুরেও পড়েছে করোনা ভাইরাসের প্রভাব। এ অবস্থায় ‘ডাক্তারের কাছে রোগী নয়, রোগীর কাছে ডাক্তার’ শ্লোগান নিয়ে করোনা মহামারিতে শরীয়তপুর-২ (নড়িয়া-সখিপুর) নির্বাচনী এলাকার মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীমের উদ্যোগে নড়িয়া উপজেলা ও সখিপুর থানা আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠন একটি ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসা সেবা চালু করেছে।
গত বছর করোনাকালীন সময়ে এপ্রিলের ৭ তারিখে এই ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসা সেবা চালু করা হয়। পরে টানা দুই মাসব্যাপী এই সেবা দেয়া হয়। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত মানুষের দোরগোড়ায় চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দিতে যাত্রা শুরু করেছিলো ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসা সেবা। এবারও ৮ এপ্রিল নড়িয়া উপজেলার ধামারন গ্রামে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম। এই টিমে দুজন চিকিৎসক, চারজন নার্স ও দুইজন স্বাস্থ্যকর্মী। প্রতিদিনই কোন না কোন ইউনিয়নে গিয়ে সেবা দিচ্ছেন।
এ কার্যক্রমে প্রতিদিন প্রায় ১৫০/২০০ রোগীকে বিনামূল্যে মেডিক্যাল চেকআপ, ওষুধ দিচ্ছেন তারা। এছাড়াও ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসা সেবায় দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের মোবাইল নম্বরগুলো (০১৭৮৮৭৩৬১৫১, ০১৯১৭৭৭৭২৬৪ ও ০১৭১৮৩৪৫৭৮৮) দিয়ে এলাকায় প্রচার করা হচ্ছে।
রোগীরা ওই নম্বরে কল করে সমস্যার কথা জানালে চিকিৎসকরা পৌঁছে যাচ্ছেন সেখানে। এমনকি টিমের কাছে কোন ঔষধ না থাকলে তা কেনার টাকাও দিচ্ছে মেডিক্যাল টিম। একারণেই এনামুল হক শামীমের মেডিক্যাল টিমের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে চারিদিকে। যার জন্য ভ্রাম্যমান এই মেডিকেল টিমের ওপর নড়িয়া-সখিপুরবাসীও ব্যাপক আস্থা।
আরও জানা গেছে, উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম এবার নড়িয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি অত্যাধুনিক জেনারেটর, শরীয়তপুর পুলিশ হাসপাতালের জন্য ৫টি অক্সিজেন সিলিন্ডার ও নড়িয়া, ভেদরগঞ্জ এবং শরীয়তপুরে প্রায় ১লাখ মাস্ক ও প্রয়োজনীয় স্যানিটাইজার প্রদান করেন। এছাড়া উপমন্ত্রী গত বছর করোনাকালীন সময়ে প্রায় ৫২ হাজার অসহায় মানুষকে খাদ্য সামগ্রী প্রদান করেছেন। এছাড়াও ১ লাখ মাস্ক, প্রয়োজনীয় সংখ্যক পিপিই ও স্যানিটাইজার বিতরণ করেছেন তিনি। পাশাপাশি নগদ অর্থও বিতরণ করেন ।
সেবা পাওয়া নড়িয়া ও সখিপুরের বাসিন্দাদের মধ্যে আব্দুল জব্বার, মতিউর রহমান, আলী আহম্মেদ, রওশনারা, মোকসেদা, রহিমা, আসমাসহ অনেকেই বলেন, এই করোনার মধ্যে আমরা যখন কোথাও যেতে পারি না, তখন পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম সাহেব আমাদের কথা চিন্তা করে মেডিক্যাল টিম করে দিয়েছে। আমাদের বিনামূল্যে ঔষধ ও নগদ টাকাও দিচ্ছে। আমরা পানি সম্পদ উপমন্ত্রীর জন্য দোয়া করি।
ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসা সেবা দেয়া ডা. শওকত আলী বলেন, একটি বিশেষায়িত শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গাড়িকে একটি মিনি হাসপাতাল হিসেবে সাজানো হয়েছে। সেখানে রয়েছে চিকিৎসার সব ধরনের সরঞ্জাম। নড়িয়া উপজেলা ও সখিপুর থানার ইউনিয়নগুলো ঘুরে ঘুরে সব ধরনের চিকিৎসা সেবা দেবে। শুধু চিকিৎসা সেবা নয়, যারা চিকিৎসা নেবেন তাদের বিনামূল্যে ওষুধও দেয়া হবে। এ মহতী উদ্যোগে আমাদের অংশিদার করায় জননেতা এনামুল হক শামীমের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি বলে জানান তিনি।
সখিপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ভেদরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব হুমায়ুন কবির মোল্লা বলেন, করোনায় থমকে আছে স্বাভাবিক জীবন। লকডাউন চলমান থাকায় সাধারণ রোগের চিকিৎসা নিতেও লোকজন হাসপাতালে যেতে পারছে না। সেসব মানুষের কথা ভেবেই পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীমের উদ্যোগে এই ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসা শুরু করা হয়।
নড়িয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের মাস্টার হাসানুজ্জামান খোকন বলেন, সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করেই পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম গত বছর এ কার্যক্রম চালু করেছিলেন। এবারও কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এ ধরনের উদ্যোগ নেয়ায় তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনিও ।
সান নিউজ/আরএস