সনজিত কর্মকার, (চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি): বাংলা চলচ্চিত্রের মিষ্টি মেয়ে কবরী অভিনীত সবচেয়ে জনপ্রিয় সিনেমা ক,খ,গ,ঘ,ঙ এই চলচ্চিত্রের পুরো দৃশ্য ধারণ করা হয়েছিলো চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের বিভিন্ন জায়গায় এবং শহরের চিরচেনা ‘কবরী রোডে’। এই সিনেমার দীর্ঘতম কাজের জন্য তিনি শহরের "সেতাব মঞ্জিল" নামে একটি বাড়িতে এক মাস অবস্থান করেন।
জীবনে প্রথমবার চুয়াডাঙ্গায় চলচ্চিত্র চিত্রায়ন হওয়ায় এবং যে সড়কে “সেতাব মঞ্জিল” অবস্থিত সেই সড়ক-কে কবরী রোড নামকরণ করেন চুয়াডাঙ্গার মানুষ। আজো করবী রোড জেলা শহরের একটি প্রাণকেন্দ্র। কবরী মৃত্যর আগে একবার কবরী রোডে খালি পায়ে হাঁটতে চেয়েছিলেন, কিন্ত তার সেই আশা আর পূরণ হলো না ।
জানা গেছে, ১৯৬৯ সালে শুটিং হয়েছিল ‘কখগঘঙ’ চলচ্চিত্র। তৎকালীন পাকিস্তানের খ্যাতিমান পরিচালক নারায়ণ ঘোষ মিতা পরিচালিত ও অভিনেতা আনোয়ার হোসেন, নায়ক রাজ রাজ্জাক এবং অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী অভিনীত ‘কখগঘঙ’ চলচ্চিত্র ১৯৭০ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পায়।
চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বেলগাছি গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে বেবী ইসলাম একজন দক্ষ চিত্রগ্রাহক ছিলেন। তার আমন্ত্রণেই পরিচালক নারায়ণ ঘোষ মিতা চুয়াডাঙ্গায় এসে নির্মাণ করেছিলেন ব্যবসা সফল সিনেমাটি। কবরী রোডে অবস্থিত যে বাড়িতে কবরী থাকতেন সেটি ছিল বেবী ইসলামের নানাবাড়ি।
২০১৬ সালে একটি অনুষ্ঠানে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার পাওয়ার পর এক সাক্ষাৎকারে কবরী বলেছিলেন, আমার জীবনে প্রথম অভিনীত সিনেমা “কখগঘঙ” চিত্রায়ন হয় চুয়াডাঙ্গায়। সেখানে আমার নামে একটি সড়ক নামকরণ করা হয়েছে। আমি সেখানে যাব এবং নিজ খরচে যাব। আমি বেঁচে থাকতে একবার রাস্তাটি দেখে যেতে চাই।
চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার তৎকালীন মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জানান, ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে পৌর পরিষদের সভায় কবরী রোড নামের প্রশাসনিক স্বীকৃতির প্রস্তাব করা হয়। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কবরী রোডকে প্রশাসনিক স্বীকৃতি দেয়া হয়।
প্রতিবেশী আনোয়ারুল ইসলাম জানান, বয়স্কদের কাছে শুনেছি জনপ্রিয় নায়িকা কবরী চুয়াডাঙ্গায় একটি ব্যবসা সফল ছবি করেছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন এ রোডের সেতাব মঞ্জিল বাড়ীতে থাকতেন। সেই সূত্র ধরে এই সড়কে কবরী রোড হিসাবে অনেকই জানে।
তিনি আরও বলেন, কবরী চলচ্চিত্রের নায়িকা চুয়াডাঙ্গায় এসেছে বলে সবাই দেখতে আসত। বলত, কবরী কোথায় থাকে? লোকজন দেখিয়ে দিত, ওই যে ওই বাড়িতে।
সম্প্রতি তার মৃত্যুর পর গ্রামের অনেকেই এ সড়ক ও বাড়িটি দেখতে আসেন।
সান নিউজ/আরএস