স্বপন দেব, নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক মেডিকেল কলেজে সমতলের উপজাতি কোটায় ভর্তি তালিকায় অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির নেতৃবৃন্দ। শনিবার (১৭এপ্রিল) দুপুরে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা চৌমুহনার স্থানীয় একটি পত্রিকা অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মণিপুরি সমাজ কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক কমলা বাবু সিংহ লিখিত বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশে সমতলে বসবাসরত উপজাতি/ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠিভূক্ত শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারি মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তির জন্য ৮টি কোটা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে সরকারি মেডিকেল কলেজে ৭৭ নম্বর কোডে সমতলের উপজাতি কোটায় ভর্তির জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যে তালিকা প্রকাশ করে তার অধিকাংশই অ-উপজাতি শিক্ষার্থী। ফলে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা হতাশাগ্রস্ত।
বাংলাদেশ সরকারের একটি মহৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভুলের কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। গত কয়েক বছর যাবৎ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ ধরনের ভুল করার কারণে অনেক উপজাতি শিক্ষার্থী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে বঞ্চিত। প্রতিবার লিখিত অভিযোগ জানানোর পরও প্রতি বছরই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ২০১৯ সালে বারবার আবেদনের মাধ্যমে তালিকা হতে অ-উপজাতি প্রার্থীর নাম বাতিল করার জন্য অনুরোধ জানানোর পরও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। ফলে আদালতের শরণাপন্ন হয়ে রিট পিটিশন (২৭৩/২০২০) দায়ের করি। রিট পিটিশনে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, মেডিকেল শিক্ষা-স্বাস্থ্য ও জনশক্তি বিভাগের পরিচালক এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপালদের বিবাদী করা হয়।
২০২০ সনের ১২ জানুয়ারি আদালত এই চার বিবাদীর প্রতি রুল করেন। এরপরও অদ্যাবধি কোন কার্যকর পদক্ষেপ গোচরীভূত হয়নি,বরং ২০২১ সালেও একই ভুলের পুনরাবৃত্তি ঘটেছে।
সংবাদ সম্মেলনে তারা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে দাবি জানান, সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে সমতলে বসবাসরত উপযুক্ত উপজাতি শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চিত, উপজাতি কোটার ভর্তি তালিকায় অ-উপজাতি শিক্ষার্থীর নাম অন্তর্ভূক্ত না করা, নূন্যতম ঢাকা মেডিকেল কলেজে ১টি, এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ সিলেটে ৩টি, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ২টি কোটা বরাদ্ধ, উপজাতি কোটায় ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের মাইগ্রেশনের সুযোগ দেওয়া এবং অধিদপ্তরের ওয়েব সাইটে ভর্তির সুযোগ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের নাম ঠিকানা জানার সুযোগ করে দেয়া।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মণিপুরি সমাজ কল্যাণ সমিতির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আনন্দ মোহন সিংহ, বাংলাদেশ মণিপুরি মুসলিম ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (বামডো) এর সভাপতি নুর উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল খালেক, চা জনগোষ্টির প্রতিনিধি মোহন রবিদাস, মণিপুরি সমাজ কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি রঞ্জু সিংহ, সাংগঠনিক সম্পাদক শান্তমনি সিংহা, বাবুল সিংহ প্রমুখ।
সান নিউজ/আরএস