সাননিউজ ডেস্ক: টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলায় নিজেকে নারী সাজিয়ে যুবককে বিয়ে করার অভিযোগ উঠেছে আলতাফ আলী (৩৫) নামে স্থানীয় এক পুরুষ কবিরাজের বিরুদ্ধে। পরে স্থানীয়রা তাকে গণধোলাই দিয়ে এলাকা ছাড়া করেছে।
গত বুধবার (১৪ এপ্রিল) উপজেলার দাড়িয়াপুর ফালু চাঁনের মাজারপাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে ওই বিয়ের জামাই জুবায়ের হোসেন (২৫) বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় তিনমাস আগে ঘাটাইল উপজেলার জামুরিয়া গ্রামের আবদুল কাদেরের ছেলে আলতাফ আলী (৩৫) নিজেকে কবিরাজ পরিচয় দিয়ে দাড়িয়াপুর মাজারপাড় এলাকায় আসে। ওই কবিরাজ মাঝেমধ্যে শাড়ী পরেও এলাকায় ঘুরাফেরা করত।
সে সন্তানহীন মহিলাদের সন্তান দানের ঝাড়ফুঁক দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন বাড়িতে গত তিনমাস ধরে অবস্থান করছে। এরই মধ্যে ওই এলাকার কৃষক রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে জুবায়ের হোসেনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। জুবায়ের ও তার পরিবারকে কবিরাজ আলতাফ আলী টাকার প্রলোভন দেখিয়ে বলেন, ‘আমি রাত ১২টার পর মেয়ে মানুষে রূপান্তরিত হবো, আমাকে বিয়ে করলে প্রচুর সম্পত্তির মালিক হবেন’।
পরে গত ১৩ এপ্রিল রাতে জুবায়ের ও কবিরাজ আলতাফের সম্মতিতেই তাদের বিয়ের প্রস্তুতি চলে। এতে লোভে পড়ে জুবায়েরের পরিবারেরও সম্মতি ছিল বলে জানা গেছে।
বুধবার সকালে এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে ওই কবিরাজকে ধরে এনে শাড়ী-ব্লাউজ খুলে গণধোলাই দিতে থাকে। পরে দাড়িয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনসার আলী আসিফ, সাবেক চেয়ারম্যান শাইফুল ইসলাম শামীম, সানোয়ার হোসেন মাস্টার ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই কবিরাজকে গণধোলাই থেকে রক্ষা করেন।
স্থানীয়রা জানায়, দাড়িয়াপুর ইউনিয়নের কাজী মাসুদ রানা একলাখ টাকা দেনমোহরে তাদের বিয়ে পড়িয়েছেন।
এ বিষয়ে কাজী মাসুদ রানা মুঠোফোনে বলেন, একটি বিয়ের রেজিস্ট্রি করতে হবে বলে আমাকে ওই এলাকায় যেতে বলা হয়েছিল। ওই বাড়িতে গিয়ে মেয়ের পাত্রীর) জাতীয় পরিচয়পত্র দিতে বলি। পরিচয়পত্র দিতে না পারায় আমি সঙ্গে সঙ্গে ফিরে এসেছি। রেজিস্ট্রি বা বিয়ে পড়ানোর তো কোনো প্রশ্নই উঠে না। কিছু লোক আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক প্রচারণা চালাচ্ছে।
কবিরাজ আলতাফের ভাতিজা ইয়ামিন বলেন, আলতাফ আলী আমাদের এলাকায়ও (ঘাটাইল) কবিরাজি করত। কিন্তু সে একটি ছেলেকে বিয়ে করবে এটা মেনে নিতে পারছিনা।
সখীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওসমান বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার পর স্থানীয়রা ওই কবিরাজকে হিজড়া দাবি করেন। পরে স্থানীয়দের অনুরোধেই তাকে ওই এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
সাননিউজ/এএসএম