স্বপন দেব, মৌলভীবাজার : প্রবাসী অধ্যুষিত ও পর্যটন সমৃদ্ধ মৌলভীবাজারে গত বছর করোনা ব্যাপক সংক্রমণ শুরু হলে এবং আক্রান্তদের রিপোর্ট ঢাকা থেকে পেতে মাসাধিক কাল বিলম্ব হলে সবমহল থেকে দাবি উঠেছিল মৌলভীবাজারে পিসিআর ল্যাব স্থাপন করার।
সে সময় সরকারের নীতি নির্ধারণী মহল, স্থানীয় জন প্রতিনিধি ও চিকিৎসক সংগঠন বিত্তশালী ব্যক্তিদের সম্মিলিত প্রচেষ্ঠায় জেলা সদর হাসপাতালে পিপিপি পদ্ধতিতে করোনা পরীক্ষার জন্য পিসিআর ল্যাব স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু বছর পেরিয়ে করোনার ঊর্ধ্বমুখী দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হলেও সেই দাবি এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। এ নিয়ে জেলা বিভিন্ন মহলে ক্ষোভ, হতাশা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় সাংসদ ও জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীর পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ডিও লেটার পাঠানো হয়েছিল। প্রবাসী বিত্তশালী ব্যক্তি ও বিভিন্ন সংগঠন আর্থিক সংস্থানের ব্যবস্থাও করেছিলেন কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। জেলা ও উপজেলা থেকে সংগ্রহ করা করোনার পরীক্ষা করা হয়েছে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিসিআর ল্যাবে। বর্তমানে সেখানে পাঠানো নমোনা পরীক্ষার পর ফলাফল আসতে সময় লাগে ৪-৭ দিন। স্থানীয় সচেতন মহল মনে করেন করোনার উচ্চ সংক্রমণ ঠেকাতে হলে জেলায় অতি দ্রুত পিসিআর ল্যাব স্থাপন প্রয়োজন।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, পিসিআর ল্যাব স্থাপন না হওয়া পর্যন্ত এপ্রিল মাসের শেষের দিকে নমোনা পরীক্ষার জন্য মৌলভীবাজার সদর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে থাকা টিবি রোগ নির্ণয়ের জন্য যে যন্ত্র রয়েছে সেটা দিয়ে ছোট্ট পরিসরে নমুনা পরীক্ষা করা যাবে। তবে এর জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমাণের করোনা পরীক্ষার কিট সাপ্লাই যা এখনো শুরু হয়নি। কবে নাগাদ কিট আসতে পারে তা বলতে পারেননি সিভিল সার্জন কার্যালয়।
বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন সিভিল সার্জন ডা: চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ। এসময় পিসিআর ল্যাব সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, এপ্রিলের শেষের দিকে কিংবা মে মাসের দিকে মৌলভীবাজার পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হতে পারে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) মৌলভীবাজার জেলা শাখার সমন্বয়কারী আসম সালেহ সোহেল বলেন, করোনার নমুনা পরীক্ষার জন্য আমাদের দাবি ছিল দ্রুত পিসিআর ল্যাব যাতে স্থাপন।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পরিসংখ্যান কর্মকর্তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর গত ২২ মার্চ থেকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত মৌলভীবাজার জেলায় ৭৫০টি নমুনা সংগ্রহ হয় এতে ১৮৩ জনের শরীরে করোনা পজেটিভ ধরা পড়ে। আর করোনায় মৃত্যু হয় ৩ জনের।
সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দেশের ৩১ জেলার মধ্যে মৌলভীবাজার জেলাকে করোনা সংক্রমণের দিক থেকে শীর্ষে রাখা হয়েছে। এরপর থেকে জেলায় দ্রুত বেড়ে যাচ্ছে করোনা সংক্রমণ।
সান নিউজ/কেটি