এম.কামাল উদ্দিন, রাঙামাটি: বৈশ্বিক মহামারী কোভিড-১৯ সংক্রমণ বৃদ্ধিতে চলমান লকডাউনের মধ্যেই কোনো রকম আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই পাহাড়ে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী উৎসববিহীন বিজু।
সোমবার (১২ এপ্রিল) শুরু হয়েছে ফুল বিজু। সকালে কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই মহান সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশে পানিতে ফুল ভাসিয়ে নিবেদন করা হয় পুষ্পাঞ্জলি। এ ছাড়া সকাল ও সন্ধ্যায় পাহাড়িদের ঘরে ঘরে জ্বালানো হয়েছে মঙ্গল প্রদীপ। প্রার্থনা জানানো হয়েছে, বৈশ্বিক মহামারী করোনাসহ যাবতীয় ভয়, অন্তরায়, বাধা-বিপত্তি, দুঃখ-গ্লানির বিনাশন করে নতুন বছরের সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে যাতে পৃথিবীর গোটা মানবজাতির অনাবিল সুখ-শান্তি প্রতিষ্ঠা লাভ হয়।
উৎসবটিকে চাকমারা বিজু ছাড়াও মারমারা সাংগ্রাই, ত্রিপুরারা বৈসুক নামে পালন করে। এর প্রথম দিন চাকমারা ফুলবিজু, মারমারা পাইংছোয়াই, ত্রিপুরারা হারিবৈসুক, দ্বিতীয় দিন চাকমারা মুলবিজু, মারমারা সাংগ্রাইং আক্যা, ত্রিপুরারা বৈসুকমা এবং তৃতীয় দিন চাকমারা গোজ্যেপোজ্যে দিন, মারমারা সাংগ্রাই আপ্যাইং ও ত্রিপুরারা বিসিকাতাল নামে পালন করে থাকে ঘরে ঘরে। এটি পাহাড়ি জনগণের প্রাণের উৎসব। প্রত্যেক বছর উৎসবে প্রাণে প্রাণে তৈরি হয় উচ্ছাসের বন্যা। সম্মিলন ঘটে পাহাড়ে বসবাসকারী সব জাতিগোষ্ঠী মানুষের। কিন্তু গত বছর এ দুই বছরের উৎসবকে কেড়ে নিল প্রাণঘাতী মহামারী করোনাভাইরাস।
এ দিকে, করোনার কারণে এবারও রাঙামাটিসহ তিন পার্বত্য জেলায় কোথাও কোনো উৎসবের উচ্ছ¡াস, আমেজ নেই। পাহাড়িদের পাড়া-গ্রামজুড়ে নীরব-নিস্তব্দতা। কেবল ঐতিহ্যবাহী সামাজিক রীতিনীতি পালন করতেই উদযাপিত হচ্ছে, পাহাড়ি জনগোষ্ঠীগুলোর তিন দিনব্যাপী প্রধান সামাজিক উৎসব বিজু। প্রত্যেক বছর চৈত্র সংক্রান্তিতে বাংলাবর্ষ বিদায় এবং বরণ উপলক্ষে এ উৎসবটি পালন করে পাহাড়িরা। চাকমারীতি অনুযায়ী প্রথম দিন পালিত হয়েছে ফুলবিজু। এরপর আগামীকাল (মঙ্গলবার) মূলবিজু এবং বুধবার গোজ্জেপোজ্জে দিন পালিত হবে, যার যার ঘরে।
সান নিউজ/কেটি