নিজস্ব প্রতিনিধি, শরীয়তপুর: শরীয়তপুরে প্রসূতি এক গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে তাকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় প্রসূতি ওই নারীর ৮ মাসের সন্তান গর্ভেই মারা যায়। গত বুধবার রাতে ওই নারী সদর হাসপাতালে মৃত সন্তান জন্ম দেয়। ধর্ষণচেষ্টা ও গর্ভে সন্তানের মৃত্যুর ঘটনায় নড়িয়া থানায় অভিযোগ করেন ওই গৃহবধূর স্বামী।
গত সোমবার নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর এলাকার এক প্রসূতি গৃহবধূ সকালে নামাজ পড়ে হাঁটতে গেলে পাশের বাড়ির ইউনুছ রাড়ি তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় গৃহবধূ বাঁচার জন্য ইনুছের হাতে কামড় দেয় ও চিৎকার করে। তখন ইউনুছের বাড়ির লোকজন ছুটে এসে ওই গৃহবধূকে বেদম মারধর করে। পরে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এলাকাবাসী জানান, সোমবার ওই নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা করে ইউনুছ রাড়ি। এ সময় ওই গৃহবধূর বাধা দিলে তাকে মারধর করে বাগানে রেখে চলে যায় ইউনুছ ও তার পরিবারের সদস্যরা। পরে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় অসুস্থ গৃহবধূকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কিছু দিন আগে ওই নারীর পরিবারের সঙ্গে ধর্ষণ চেষ্টাকারী ইউনুছ রাড়ির পারিবারিক ঝগড়া হয়েছিল। সেই শত্রুতার কারণে গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টা করতে পারে ইউনুছ।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ওই গৃহবধূ সকালে নামাজ পড়ে হাঁটতে গেলে স্থানীয় ইউনুছ ওই নারীকে পেছন থেকে এসে জড়িয়ে ধরে ধর্ষণের চেষ্টা করে, ধর্ষণচেষ্টায় ব্যর্থ হলে তার পরিবারসহ সে ওই নারীকে মারধর করে। এতে তার ৮ মাসের গর্ভের সন্তান মারা যায়। গত বুধবার রাতে ওই নারী মৃত সন্তান প্রসব করেন।
ওই গৃহবধূ জানান, ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সকালে নামাজ পড়ে হাঁটতে যাওয়ার পর, অভিযুক্ত ইউনুছ তাকে পেছন থেকে এসে শরীরে হাত দেয় এবং জড়িয়ে ধরে। বাঁচার জন্য তার হাতে কামড় ও চিৎকার করেন তিনি। পরে ইউনুছের বাড়ির লোকজন এসে উল্টো ওই নারীকে মারধর করে।
অভিযুক্ত ইউনুছ রাড়ি জানান, সে সকালে মাছ বিক্রি করতে যাওয়ার সময় ওই নারী তাকে জড়িয়ে ধরে। পূর্ব শত্রুতার জেরে তাকে ফাঁসানোর জন্য এই নাটক করেছে ওই নারী। তবে মারধরের কথা এড়িয়ে যান অভিযুক্ত ধর্ষণ চেষ্টাকারী ইউনুছ রাড়ি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ওই নারীর ৮ মাসের গর্ভের সন্তান পেটেই মারা যায়। শুক্রবার সদর হাসপাতালে তার মৃত্যু সন্তান জন্ম হয়।
সদর হাসপাতারের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিদ্যা বিভাগের সিনয়র কনসালট্যান্ট ডা. হোসনে আরা রোজি জানান, ওই নারীকে যেদিন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, তার শারীরিক অবস্থা ভালো না দেখে তাকে কিছু পরীক্ষা দেওয়া হয়। পরীক্ষাতে দেখা যায়, তার বাচ্চা মারা গেছে। পরে বুধবার রাতে ওই নারী মৃত বাচ্চা প্রসব করে।
সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্পনা কর্মকর্তা সনোলোজিস্ট ডা. সোবহান জানান, ওই নারীকে যেদিন হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়, সেদিন ওই নারীর বাচ্চা মারা যায়। ময়নাতদন্ত ছাড়া বলা যাবে না কীভাবে তার বাচ্চা মারা গেছে।
এ বিষয়ে নড়িয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) প্রবীণ চক্রবর্তী বলেন, ‘বৃহস্পতিবার একটি ধর্ষণের চেষ্টা ও হত্যার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন গৃহবধূ স্বামী। আমরা লাশ ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করেছি। তদন্ত করে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবো।’
সান নিউজ/এএ/কেটি