নিজস্ব প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার অত্যন্ত দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থী অয়ন কুমার দে মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষা উত্তীর্ণ হয়েছে। দারিদ্রতার কারণে মেডিকেলে ভর্তি হওয়া আর পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে পরিবারের অনিশ্চয়তা। সে এবারের ভর্তি পরীক্ষায় এমবিবিএসে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পেলেও কিভাবে ছেলেকে পড়াবেন তা নিয়ে বিনিদ্র রজনী কাটাচ্ছেন অয়নের অসহায় মা।
স্কুলের বারান্দায় পা রাখার ছয় মাস আগে হারান প্রাণঘাতী ব্রেন টিউমারের কাছে হার মানেন অয়নের বাবা নিধু রঞ্জন দে। বাবার স্বপ্ন ছিলো ছেলে একদিন ডাক্তার হবে। মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ বাবার স্বপ্ন পূরণে প্রথম ধাপ অতিক্রম করলেন অয়ন। কিন্তু মেডিকেল কলেজে ভর্তি ও লেখাপড়া চালিয়ে ডাক্তার হওয়া নিয়ে জেগেছে শঙ্কা। এতো খরচ চালাবেন কিভাবে তা নিয়ে রয়েছেন দুঃশ্চিন্তায় মা।
কুলাউড়ার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের সুলতানপুরের গৃহিণী অনিমা রাণী দে অয়নের মা। বাবার অবর্তমানে দুই ছেলেকে নিয়ে ২০০৫ সাল থেকে কঠোর সংগ্রাম করে পরিবার চালাচ্ছেন। স্বামীর স্বপ্ন পূরণে তিনি সন্তানদের লেখাপড়ায় অনুপ্রেরণা যুগিয়ে যাচ্ছেন। তাই অয়নের সাফল্যে সবচেয়ে খুশি মা অনিমা দে।
অয়ন জানান, বাবার স্বপ্ন আর মায়ের অনুপ্রেরণা আজকের এই সাফল্য। বাবা বেঁচে থাকলে সবচেয়ে বেশি খুশি হতেন। অয়ন কুলাউড়ার লংলা আধুনিক ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসিতে জিপিএ ফাইভ এবং আলী আমজদ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ থেকে এসএসসিতে জিপিএ ফাইভ পান। এছাড়া ৫ম ও ৮ম শ্রেণীতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি লাভ করেন। ভর্তি পরীক্ষার তারিখ জানার পর প্রস্তুতি হিসেবে প্রতিদিন ১০ ঘণ্টা করে পড়ালেখা করেছে সে। অবশ্য তার ফলও পেয়েছে মেডিকেলে ভর্তি হতে পেরে। ছোটবেলা থেকে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন নিয়েই পড়াশোনা করে অয়ন। তার পড়ালেখায় সে অনুপ্রেরণা পেয়েছে অসহায় মায়ের কাছ থেকে। এখন শুধুই চিন্তা স্বপ্নের সফল বাস্তবায়ন আর প্রয়াত বাবা ও দুঃখিনী মায়ের আকাঙ্খার পূরণের চেষ্টা। সমাজের বিত্তবান কোন সুহৃয় ব্যক্তি কি তাদের পাশে দাঁড়াবেন?
সান নিউজ/এসকে/কেটি