এম.কামাল উদ্দিন, রাঙামাটি : প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও রাঙামাটিতে চাষিরা চাষ করেছে মৌসুমি ফল তরমুজ। কাপ্তাই হ্রদের জলে ভাসা জমিতে এই ফলন ভাল হওয়ায় হাসি ফুটেছে তরমুজ চাষিদের মুখে। এখন টসটসে, মিষ্টি ও রসালো তরমুজে সয়লাব রাঙামাটির হাট-বাজারগুলো। রাঙামাটির উৎপাদিত তরমুজ স্থানীয় বাজার ছাড়িয়ে বাজারজাত হচ্ছে জেলা বাহিরেরও।
স্থানীয় চাষিরা জানান, চলতি মৌসুমে রাঙামাটির প্রত্যন্ত পাহাড়ি এলাকায় তরমুজের প্রচুর উৎপাদন হয়েছে। ফলেছে বাম্পার ফলনও। তরমুজ আবাদে ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে অনেক চাষির।
পাহাড়ে তরমুজের অভাবনীয় উৎপাদনে চাষিরাও বেশ লাভবান হয়েছে। জেলার বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় এ মৌসুমেও তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। বর্তমানে স্থানীয় বাজারে বড় ও মাঝারি আকারের প্রতি পিস তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪০০ টাকা এবং ছোট আকারের তরমুজ ১৮০-২২০ টাকায়। একথায় ১০০ টাকার নিচে কোন তরমুজ নেই।
শহরের মগবান ইউনিয়নের তারিঙ্গা পাড়ায় বেশ কয়েকটি বিচ্ছিন্ন টিলা ছেয়ে আছে তরমুজের আবাদি ফসলে। বর্তমানে এই ফসলের ফল মোটা তাজা করতে সার কীটনাশক ও যাবতীয় কৃষি উপকরণ ব্যবহার করা হচ্ছে, গত বছরের চেয়ে এবার অনেকটা তরমুজ ভাল উৎপাদন হয়েছে। গত বছরের ন্যায় এবছর দাম বেশি পাওয়া গেছে। এবার বৃষ্টি দেরীতে হওয়ায় ফলন ভাল হয়েছে।
তরমুজ চাষি আব্দুর রহিম বলেন, তরমুজের ক্ষেত করতে দুই-তিন লাখ টাকা খরচ করলে পাঁচ-ছয় লাখ টাকা পাওয়া যায়, আমরা এই জমিতে বছরের চার-পাঁচ মাস চাষ করতে পারি কারণ এই জমি পানিতে ডুবে থাকে। পানি থেকে ভেসে উঠলে আমরা তরমুজের বীজ রোপণ করি, এবার আমাদের চাষের ফলনও ভালো হয়েছে, তরমুজ বিক্রি করে লাভবান হয়েছি।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষ্ণ প্রসাদ মল্লিক এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমাদের পরিসংখ্যান মতে রাঙামাটি জেলায় এবছর ২শ ৫০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে, খুব সা¤প্রতিক সময়ে এর ফলন পাবে কৃষক ভাইয়েরা। এর মধ্যে আমাদের বেশিরভাগ তরমৃজ হয় লংগদু উপজেলায়। তবে গত কয়েক বছর ধরে সদর উপজেলায়ও তরমুজের আবাদের প্রবণতা খুবই বাড়ছে। এবছরের আমাদের তথ্য মতে শুধু মাত্র রাঙামাটি জেলা সদরের ৪০ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ করা হয়েছে। এ ধরণের আবাদ হতে থাকলে আমরা আশা করছি আমাদের কৃষকরা উপকৃত হবে এবং ফলন ও ভালো হবে বলে আশা করা যায়।
তিনি আরো বলেন, আমাদের কৃষক ভাইদের প্রশিক্ষণ এবং মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন সহায়তাসহ সকল প্রকারের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা। প্রত্যন্ত দুর্গম উপজেলা বাঘাইছড়ি, লংগদু, নানিয়ারচর, বরকল ও জুরাছড়ি থেকে এসব তরমুজ জেলা শহর হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যায়।
বছরের এই সময়টাতে হ্রদের পানি কমতে থাকায় দ্বীপগুলো পানির উপরে উঠে আসে আর সেই সময়টাই তরমুজ চাষ করা উপযোগী সময়। এবছর ফসলের উৎপাদিত ফলন ভালো হওয়ায় বিক্রি করে দাম ও অনেকটা ভাল পওয়া গেছে বলে জানান স্থানীয় তরমুজ চাষিরা।
সান নিউজ/কেটি