শিপলু জামান, ঝিনাইদহ : স্বাধীনতার ৫০ বছরেও স্বীকৃতি পায়নি একসাথে ৫ জন স্বজন হারানো ঝিনাইদহের মুক্তিযোদ্ধার পরিবারটি। স্বজন হারানো আর বোমার স্পিলিন্টারের আঘাত এখনও মনে করিয়ে দেয় সেদিনের সেই ভয়াবহ দিনের কথা। এত বছর পেরিয়ে গেলেও আজও স্বীকৃতি মেলেনি তাদের। ভাতা বা সুযোগ সুবিধা নয়, পরিবারটি শুধু চায় সম্মান।
এভাবেই সেদিনের সেই ভয়াবহ দিনের কথার বর্ণনা দিচ্ছিলেন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গিলাবাড়ীয়া গ্রামের চায়না খাতুন। কথা বলতে গিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন তিনি।
১৯৭১’র ডিসেম্বর মাসের ৫তারিখ দুপুর। গিলাবাড়ীয়া গ্রামের মোকছেদুর রহমান স্ত্রী ও ৩ সন্তান নিয়ে বসে ছিলেন বাড়ীর উঠানে। পাকিস্থানি বিমান বাহিনীর একটি বিমান তাদের লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যায় মোকছেদুর রহমানের দেহ। আহত হয়ে কিছুক্ষণ পর মারা যায় স্ত্রী ছকিনা খাতুন মেয়ে রানু খাতুন, ২ ছেলে তোতা মিয়া ও পাতা মিয়া। আহত হয় ছোট মেয়ে চায়না খাতুন। ভাগ্যক্রমে বাড়ীর বাইরে অবস্থান করায় বেঁচে যান ছেলে মিজানুর রহমান। পরিবারের ৫ সদস্যকে হারিয়ে বোন চায়না খাতুন ও মিজানুর রহমান হয়ে পড়েন অসহায়। সেসময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাদের জন্য ২ হাজার টাকা অনুদান দেন। গ্রামবাসীর সহযোগিতায় চলে তাদের সংসার। মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য দেওয়া ও নানাভাবে সহযোগিতা করায় এ হামলার স্বীকার হয় পরিবারটি বলে জানায় প্রত্যক্ষদর্শীরা।
স্বাধীনতার এতগুলো বছর পার হলেও আজও স্বীকৃতি মেলেনি তাদের। ভাতা বা সুযোগ সুবিধা নয়, পরিবারটি শুধু চায় সম্মান। ঝিনাইদহ সদর, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সিদ্দিক আহম্মেদ বলেন, স্বীকৃতির জন্য সরকারের বিশেষ নজর দরকার ।
সরকারের সুদৃষ্টিতে স্বজন হারানো পরিবারটি মুক্তিযুদ্ধো পরিবারের স্বীকৃতি পাবে এমনটি আশা করেন এলাকাবাসী।
সান নিউজ/এসজে/ এনকে